ওপেন মেসেজ সম্পাদকীয়

ঈদে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বাড়ছে, যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি!

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ৩-৪-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৫৬

ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি, কারণ অনেক দুর্ঘটনার খবর হাসপাতালে ভর্তি না হওয়া বা থানায় তথ্য না জানানোর কারণে পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত হয় না। তবে, নিয়মিত যে পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে, তা উদ্বেগজনক। সড়ক দুর্ঘটনার একের পর এক খবর আসছে, যার অধিকাংশই সড়ক অব্যবস্থাপনা, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক ও চালকের বেপরোয়া চালনার কারণে হচ্ছে।

ঈদের সময়টাতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি জাঙ্গালিয়া বাঁকে ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে। সেখানে রিলাক্স পরিবহনের একটি বাস ও বিপরীত দিক থেকে আসা কক্সবাজারগামী দ্রুতগতির দুটি মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে শিশু, নারীসহ ১০ জন নিহত হন। এছাড়া, একই এলাকায় সোমবার সকালে আরও একটি যাত্রীবাহী বাস ও মিনিবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৫ তরুণ নিহত হন।

প্রশ্ন উঠছে, এসব মৃত্যুর দায় কি আমাদের সড়ক ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর নয়? ওই বাঁকটি যে বিপজ্জনক, তা তো সওজ বিভাগের অজানা হওয়ার কথা নয়। তারপরও কেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিল না? এই ধরনের বিপজ্জনক বাঁক দেশের আরও অনেক সড়কে রয়েছে, তবে সেগুলোর অবস্থান এখনও অপরিবর্তিত। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের মতো বাঁকগুলো সংস্কারের আওতায় আনা জরুরি। অতীতে, ঢাকা-মানিকগঞ্জ সড়কের একটি বিপজ্জনক বাঁক সংস্কার করা হয়েছিল যখন চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও সাংবাদিক মিশুক মুনীর নিহত হন। সুতরাং, এক্ষেত্রে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

ঈদের সময় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাও বেড়ে গেছে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে। অধিকাংশ মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী হেলমেট পরেন না এবং অতিরিক্ত আরোহী নিয়ে গাড়ি চালান, যার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। এছাড়া, ঈদের পর সড়ক ব্যবস্থাপনায় যে সতর্কতা থাকা প্রয়োজন, তা একপ্রকার শিথিল হয়ে যায়, যার ফলে দুর্ঘটনা বাড়ে। কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে একেকটি দুর্ঘটনা একটি পরিবারকে চিরতরে বিধ্বস্ত করে দেয়।

সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সড়ক ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর বড় দায়িত্ব বর্তায়। দুর্ঘটনাগুলি শুধু চালকদের কারণে নয়, সড়ক অব্যবস্থাপনা ও অস্বাভাবিক বাঁকগুলোর কারণে ঘটছে। সড়কগুলোর বাঁক সংস্কার সম্ভব না হলেও, নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেমন- নিয়মিত মনিটরিং, সিগন্যাল, গতি নিয়ন্ত্রণ এবং সংকেত ব্যবস্থা স্থাপন করলে অনেক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব। আশা করা যাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শিগগিরই যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।