সাইবার বুলিং, নারী নিপীড়ন এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলমান গুপ্তরাজনীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নারী নেতা–কর্মীরা। একইসঙ্গে নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও সাইবার অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার দাবিও জানান তারা।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান ফটকের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। কর্মসূচিতে অংশ নেন ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নারী নেত্রী ও কেন্দ্রীয় নেতারা।
মানববন্ধনে ছাত্রদল নেতারা অভিযোগ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রশিবির দীর্ঘদিন ধরে পরিচয় গোপন রেখে গুপ্তরাজনীতি চালিয়ে আসছে। তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের নীরব পৃষ্ঠপোষকতায় শিবিরকর্মীরা সক্রিয় রয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, শিবিরকর্মীরা নারী শিক্ষার্থীদের সামাজিক মাধ্যমে সাইবার বুলিং করছে, এমনকি তাদের গণধর্ষণের হুমকিও দিচ্ছে।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেন, “শিবির সাড়ে ১৫ বছর ছাত্রলীগের ছায়ায় থেকে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের ওপর হামলা চালিয়েছে। এখনো তারা গোপনে রাজনীতি করছে। ক্যাম্পাসে যদি গুপ্তরাজনীতি চলতে থাকে, আমরা তা প্রতিহত করব।” তিনি শিবির নেতাদের উদ্দেশে বলেন, “সাহস থাকলে প্রকাশ্যে রাজনীতি করুন, না হলে বোরকা পরে, চুড়ি পরে রাজনীতি করুন।”
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন বলেন, “ডাকসু নির্বাচনের রিট করায় আমাদের এক সহযোদ্ধা নারী শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে। এটি ভয়াবহ ঘটনা। গুপ্তরাজনীতি না থাকলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।” তিনি ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনে শিবিরপন্থী কোনো প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানান।
ছাত্রদলের নারী নেত্রী রুপন্তী রত্না বলেন, “আমরা রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতে চাই, কিন্তু প্রতিদিন ভয়ভীতি আর সাইবার বুলিং আমাদের পেছনে টেনে ধরে। এখন সময় এসেছে গুপ্তরাজনীতি বন্ধের।”
সহসভাপতি রেহানা আক্তার শিরিন বলেন, “৭১-এর পরাজিত শক্তি এবং ’২৪-এর রাজনৈতিক পরাজিত শক্তি আজ এক হয়ে নারীদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। সাইবার বুলিং ও ধর্ষণের হুমকি যারা দেয়, তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির শিক্ষার্থী সাদিয়া সুলতানা বলেন, “নারীদের বিরুদ্ধে সাইবার বুলিং হলে কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয় না। অপরাধীরা বারবার পার পেয়ে যায়। তাই দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
মানববন্ধনে ছাত্রদল নেতারা ঘোষণা দেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে গুপ্তরাজনীতি চিরতরে বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং সাইবার অপরাধীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানান তারা।