নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের সাতজন নিহত হয়েছেন। বুধবার (৬ আগস্ট) ভোরে উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের কাদিরপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা সবাই লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার হাজীরপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম চৌপালী এলাকার বাসিন্দা।

জানা গেছে, নিহতরা সবাই মধ্যপ্রাচ্যের ওমান থেকে ফেরা এক প্রবাসী স্বজনকে বিমানবন্দর থেকে আনতে ঢাকায় গিয়েছিলেন। ফেরার পথে তারা দুটি যানবাহনে—একটি প্রাইভেটকার ও একটি হাইস মাইক্রোবাসে করে লক্ষ্মীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথিমধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রোবাসটি রাস্তার পাশের একটি খালে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই সাতজনের মৃত্যু হয়।

নিহতদের মধ্যে রয়েছেন—ফয়জুন নেসা (৮০), খুরশিদা বেগম (৫৫), কবিতা বেগম (৩০), লাবনী বেগম (৩০), রেশমি আক্তার (১০), মীম আক্তার (২) এবং লামিয়া আক্তার (৯)। নিহতদের সবাই পরস্পর আত্মীয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, দুর্ঘটনাটি ঘটে ভোররাতে। গভীর অন্ধকারে প্রথমে কিছুই বোঝা যাচ্ছিল না। পরে আশপাশের মানুষ আলো দেখে ছুটে এসে উদ্ধার কাজে অংশ নেন।

চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোবারক হোসেন ভূঁইয়া বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চালক ঘুমিয়ে পড়ায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়। মাইক্রোবাসে থাকা কয়েকজন বের হয়ে আসতে পারলেও সাতজন আটকা পড়ে প্রাণ হারান। তাদের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. মনির হোসেন বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত দুটি মরদেহ পেয়েছি, এবং ধারণা করছি বাকি পাঁচজনও ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন।”

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি মো. লিটন দেওয়ান জানান, দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাসটি রেকারের সাহায্যে উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে আর কোনো মরদেহ নেই। ওমানফেরত প্রবাসী ব্যক্তি জীবিত রয়েছেন।

এদিকে, একই পরিবারের এতজনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারটিকে সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।