রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে পান করার অভ্যাস আমাদের উপমহাদেশে বহু পুরনো। প্রাচীন আয়ুর্বেদ থেকে শুরু করে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান- সব জায়গাতেই এর উপকারিতার কথা বলা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, হলুদ দুধ শুধু ঘুমের জন্য নয়, বরং এটি শরীর ও মন দুটোর জন্যই এক অনন্য প্রাকৃতিক টনিক।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
হলুদের প্রধান উপাদান কারকিউমিন শরীরের প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে সর্দি-কাশি, মৌসুমী জ্বর ও ফ্লুর বিরুদ্ধে এটি দারুণ কার্যকর। নিয়মিত হলুদ দুধ পানে এসব সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
হলুদ দুধে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ, যা শরীরের অভ্যন্তরীণ ক্ষত সারাতে এবং ত্বকের নানা সমস্যা যেমন ব্রণ, ফুসকুড়ি প্রভৃতিতে উপশমে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
ঘুমের মান উন্নত করে
হালকা গরম হলুদ দুধ পান করলে মস্তিষ্কে আরামের সংকেত যায়, যা গভীর ঘুমে সহায়তা করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে ঘুমের গুণগত মান যেমন বাড়ে, তেমনি নিদ্রাহীনতা বা অনিদ্রার সমস্যাও ধীরে ধীরে কমে আসে।
প্রদাহ কমাতে সহায়ক
কারকিউমিনে রয়েছে প্রাকৃতিক প্রদাহ-নাশক উপাদান, যা দেহের অভ্যন্তরে জমে থাকা লুকানো প্রদাহ হ্রাস করে। বিশেষ করে আর্থ্রাইটিস বা জয়েন্টের ব্যথা কমাতে এটি কার্যকর।
মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায়
হলুদ দুধ শুধু দেহ নয়, মনেও প্রশান্তি আনে। এটি মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক এবং মানসিক চাপ বা অবসাদ কাটাতেও কার্যকর। দীর্ঘমেয়াদে স্মৃতিশক্তি রক্ষায়ও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদি রোগ প্রতিরোধে সহায়ক
নিয়মিত হলুদ দুধ পানের মাধ্যমে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ক্যান্সার ও আলঝাইমার রোগের ঝুঁকি কমে যেতে পারে বলে গবেষণায় দেখা গেছে। কারকিউমিন ছাড়াও এতে আদা ও দারুচিনির মতো উপাদান মেশালে এর কার্যকারিতা আরও বাড়ে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এক গ্লাস গরম হলুদ দুধ শুধু একটি ঘরোয়া স্বাস্থ্য টোটকাই নয়, বরং এটি হতে পারে দৈনন্দিন জীবনের অংশ- “wellness ritual”। দেহ ও মনের প্রশান্তির জন্য এটি নিয়মিত গ্রহণ করা যেতে পারে, বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে।
সূত্র: আজতক বাংলা