কয়লা দূষণের হাত থেকে দেশের অমূল্য সম্পদ সুন্দরবন, জাতীয় মাছ ইলিশ ও উপকূলীয় লবণ শিল্প রক্ষায় রামপাল, তালতলি, কলাপাড়া, মহেশখালী ও বাঁশখালিতে স্থাপিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো দ্রুত বন্ধের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
তারা বলেছেন, ২০৩৫ সালের আগেই বাংলাদেশকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে। এজন্য সুস্পষ্ট সময়সীমা, রোডম্যাপ এবং বিকল্প নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের পরিকল্পনা গ্রহণ জরুরি।
এই দাবিতে মঙ্গলবার রাজধানীর শ্যামলী পার্ক মাঠে আয়োজিত এক প্রতীকী প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, রিভারাইন পিপলসহ ২০টি পরিবেশ, কৃষি ও নাগরিক সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ‘ধরা’র সহ-আহ্বায়ক এম এস সিদ্দিকী এবং সঞ্চালনা করেন ‘রিভার বাংলা’র সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন ‘ধরা’র সদস্যসচিব শরীফ জামিল।
অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন—বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এস এম বদরুল আলম, রিভারাইন পিপলের ট্রাস্টি এফ এম আনোয়ার হোসেন, ইআরডিএ’র নির্বাহী পরিচালক মনির হোসেন চৌধুরী, ইকুইটি বিডির পরিচালক মোস্তফা কামাল আকন্দ, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, মিশন গ্রিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান রনি, 350.org-এর দক্ষিণ এশিয়া কো-অর্ডিনেটর আমানুল্লাহ পরাগ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, “কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো শুধু পরিবেশ নয়, খাদ্য নিরাপত্তা, প্রাণবৈচিত্র্য এবং উপকূলীয় জীবনজীবিকার জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় স্বার্থে এই কেন্দ্রগুলো দ্রুত বন্ধ করা উচিত।”
তারা আরও বলেন, “জলবায়ু অর্থায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর করতে হবে। কয়লা বা গ্যাস কখনোই পরিবেশবান্ধব জ্বালানি হতে পারে না।”
এই কর্মসূচি ছিল এশিয়া এনার্জি নেটওয়ার্ক ও এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর বিশ্বব্যাপী একযোগে আয়োজিত প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আসন্ন অধিবেশন সামনে রেখে এশিয়ার ৯টি দেশের ৭০টি শহর ও অঞ্চলে একযোগে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।