সকল খবর বিদেশের খবর

বিশ্বে প্রথমবার হাফ ম্যারাথনে অংশ নিল রোবট!

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ২০-৪-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৩০

মানুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, যন্ত্রচালিত পদক্ষেপে ইতিহাস গড়ল হিউম্যানয়েড রোবট। চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের রাজপথে শনিবার ভোরে অনুষ্ঠিত এক ব্যতিক্রমী হাফ ম্যারাথনে অংশ নেয় ডজনখানেক দুই পায়ে চলতে সক্ষম রোবট। এ ঘটনাকে প্রযুক্তির ইতিহাসে একটি ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবেই বিবেচনা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

২১ কিলোমিটার দীর্ঘ এই হাফ ম্যারাথনটি অনুষ্ঠিত হয় বেইজিংয়ের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা হাই-টেক শিল্পাঞ্চল ই-টাউনে। এর মূল লক্ষ্য ছিল—বাস্তব পরিস্থিতিতে রোবটগুলোর সক্ষমতা, সহনশীলতা ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পরীক্ষা।

প্রতিযোগিতার শুরুতেই চীনা পপ গান ‘আই বিলিভ’ বেজে ওঠে। স্টার্টারের গুলির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের পাশাপাশি সারিবদ্ধভাবে হাঁটতে শুরু করে রোবটগুলো। উপস্থিত জনতা মোবাইল ক্যামেরা তাক করে ধরতে থাকেন এই অভিনব দৃশ্য।

একটি ছোট আকৃতির রোবট পড়ে গেলে, কিছুক্ষণ পর নিজেই উঠে দাঁড়ায়—এই মুহূর্তে করতালির রোল ওঠে দর্শকদের মাঝে। ট্রান্সফরমারের মতো দেখতে আরেকটি প্রপেলারচালিত রোবট একটি রেলিংয়ে ধাক্কা খেয়ে এক প্রকৌশলীর ওপর পড়ে যায়—যা মুহূর্তেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে।

ই-টাউন ব্যবস্থাপনা কমিটির উপ-পরিচালক লিয়াং লিয়াং বলেন, মানুষের কাছে এটি ছোট পদক্ষেপ হতে পারে, তবে হিউম্যানয়েড রোবটের জন্য এটি এক বিশাল লাফ।”

প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় চীনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রায় ২০টি দল। রোবটগুলোর উচ্চতা ছিল ৭৫ থেকে ১৮০ সেন্টিমিটার এবং ওজন সর্বোচ্চ ৮৮ কেজি। কিছু রোবট স্বয়ংক্রিয়ভাবে দৌড়ায়, আবার কিছু পরিচালিত হয় রিমোট কন্ট্রোলে।

নোয়েটিক্স রোবটিকসের ২৮ বছর বয়সী প্রকৌশলী ছুই ওয়েনহাও বলেন, ুপ্রতিদিন আমাদের একটি রোবট অনুশীলন করেছে হাফ ম্যারাথনের জন্য। প্রতি কিলোমিটারে সময় নিয়েছে মাত্র সাত মিনিট।” তিনি আরও জানান, সতর্কতা হিসেবে তারা একটি ব্যাকআপ রোবটও প্রস্তুত রেখেছিলেন।

ড্রয়েডআপ কোম্পানির ২৫ বছর বয়সী কং ইচ্যাং বলেন, এই আয়োজন কেবল একটি প্রতিযোগিতা নয়; বরং এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি প্রযুক্তিগত ভিত্তি রচনা করছে।”

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ চীন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবট শিল্পে নেতৃত্ব গ্রহণের উচ্চাকাঙ্ক্ষা অনেক দিনের। এই হাফ ম্যারাথন আয়োজন ছিল সেই প্রচেষ্টারই একটি সাহসী উদাহরণ।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে চীনের একটি স্টার্টআপ ডিপসিক দাবি করে, তারা এমন একটি জেনারেটিভ চ্যাটবট তৈরি করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রযুক্তিগুলোর তুলনায় অধিক কার্যকর ও সাশ্রয়ী।

বিশ্লেষকদের মতে, এই রোবট ম্যারাথন শুধু প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা নয়, বরং মানুষ ও যন্ত্রের সম্ভাব্য সহাবস্থানের এক বাস্তব চিত্রও তুলে ধরল বিশ্ববাসীর সামনে।

সূত্র: সিএনএন