রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনার পরদিন উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস। মঙ্গলবার সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা অভিযোগ করছেন, বিমান দুর্ঘটনায় প্রকৃত নিহতের সংখ্যা গোপন করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে তারা এ ঘটনাকে “হত্যাকাণ্ড” আখ্যা দিয়ে বিচার দাবি করছেন।
সকালে সরেজমিনে ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানের ভেতরে ও বাইরে শিক্ষার্থীদের ঢল নেমেছে। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ ও ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীদের দাবি—প্রকৃত নিহতের তালিকা প্রকাশ করতে হবে, আর এই ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে নিতে হবে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা।
এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে ক্যাম্পাসে যান প্রতিষ্ঠানটির আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল এবং শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। বর্তমানে দুই উপদেষ্টা একাডেমিক ভবনের ভেতরে অবস্থান করছেন, আর বাইরে উত্তপ্ত পরিবেশে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
দুর্ঘটনার স্থানে আজও ভিড় করছেন বহু মানুষ। অনেকে কৌতূহলী দর্শনার্থী হলেও, কেউ কেউ নিখোঁজ স্বজনের খোঁজে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এক মা জানান, সোমবারের ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর তার সন্তানের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান এফটি-৭ বিজিআই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাঙ্গণে বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় বিমানের পাইলটসহ এখন পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী।
অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের প্রশ্ন—যদি এটি দুর্ঘটনা হয়, তবে কেন এত প্রাণহানি? এবং কেন এখনো পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে না?
শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছেন, তাদের দাবি মানা না হলে আন্দোলন আরও তীব্রতর করা হবে।