চীনের কমিউনিস্ট পার্টি জনসংখ্যা হ্রাসের ক্রমবর্ধমান সংকট মোকাবিলায় নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশটির নাগরিকরা এখন থেকে তাদের অস্থায়ী ঠিকানায়ও বিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন। পূর্ববর্তী নিয়ম অনুযায়ী, কেবল স্থায়ী ঠিকানাতেই বিয়ে নিবন্ধনের অনুমতি ছিল, যা অনেক তরুণ-তরুণীর জন্য বিবাহ প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলেছিল।
সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে চীনে বিয়ের হার প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে। একই সঙ্গে জন্মহারও রেকর্ড নিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ অবস্থায় জনসংখ্যা স্থিতিশীল করতে বেইজিং একের পর এক নীতি পরিবর্তন করছে।
এ বিষয়ে জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ড. লি ওয়েই বলেন, "শহরমুখী কর্মজীবী তরুণদের জন্য স্থায়ী ঠিকানায় ফিরে গিয়ে বিয়ে নিবন্ধন করা কষ্টসাধ্য ছিল। নতুন নিয়মে তাদের বিবাহে উৎসাহিত করা হচ্ছে।"
গত এক দশক ধরে চীনে জনসংখ্যা সংকট তীব্র হচ্ছে। ২০২২ সালে ছয় দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো দেশটিতে জনসংখ্যা কমতে শুরু করে। একসময় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে কঠোর 'এক সন্তান নীতি' চালু রাখলেও ২০১৬ সালে তা শিথিল করে চীন। ২০২১ সাল থেকে দম্পতিদের তিন সন্তান নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
বর্তমানে সরকার বিয়ের পাশাপাশি সন্তান জন্মদানেও নানা প্রণোদনা দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে শিশু ভাতা, বাড়ি কেনায় সহায়তা এবং মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ বাড়ানো। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং কর্মক্ষেত্রে চাপের কারণে অনেক তরুণ দেরিতে বিয়ে করছেন অথবা সন্তান নিতে অনিচ্ছুক।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বর্তমান প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ২০৩৫ সাল নাগাদ দেশটির ৬০ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশে পৌঁছাবে। এ অবস্থায় সরকারের এই উদ্যোগ কতটা কার্যকর হবে, তা এখন দেখার বিষয়।