এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার। আগামী বছর থেকে শুধুমাত্র এমসিকিউ নয়, পরীক্ষার্থীদের জন্য যুক্ত করা হতে পারে লিখিত পরীক্ষাও। এছাড়াও চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার আগে থাকতে পারে আরও কয়েকটি মূল্যায়ন ধাপ। দক্ষ ও মানবিক চিকিৎসক তৈরির লক্ষ্যে এই সংস্কার আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর।
পরীক্ষা পদ্ধতিতে কেন পরিবর্তন?
বর্তমানে দেশে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে মোট ১০৪টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। প্রতি বছর প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থী এমবিবিএসে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। বর্তমানে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষার মাধ্যমে এই ভর্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধুমাত্র এমসিকিউ ভিত্তিক পরীক্ষা উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচনের জন্য যথেষ্ট নয়।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. নিজাম উদ্দীন বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার পর বিষয়টির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এতে করে শুধু একজন শিক্ষার্থীরই ক্ষতি হয় না, বরং দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপরও প্রভাব পড়ে। তাই ভর্তি পরীক্ষায় পরিবর্তন জরুরি।’
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, ‘চিকিৎসা একটি ব্যতিক্রমী পেশা। শুধু মেধা থাকলেই একজন ভালো চিকিৎসক হওয়া সম্ভব নয়, মানবিকতা ও যোগাযোগ দক্ষতাও গুরুত্বপূর্ণ। অনেক দেশে এই বিষয়গুলো মূল্যায়নের জন্য বিশেষ পদ্ধতি চালু আছে। আমাদের দেশেও এমন ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনা চলছে।’
ভর্তি পরীক্ষার নতুন কাঠামো কী হতে পারে?
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসেন জানিয়েছেন, ‘এক সময় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় লিখিত ও মৌখিক উভয়ই ছিল। এখন শর্ট প্রশ্নভিত্তিক লিখিত পরীক্ষার বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।’
তবে নতুন পদ্ধতি বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য বিভাগ দুই বছর সময় নিতে চায়। পাশাপাশি আসন সংখ্যা কমানোর বিষয়েও আলোচনা চলছে, কারণ গত বছর সুযোগ-সুবিধা না বাড়িয়েই মেডিকেলের আসন সংখ্যা ১,০৩০টি বৃদ্ধি করা হয়েছিল।
ভর্তি পরীক্ষার চূড়ান্ত পরিবর্তন কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত আসছে আগামী মাসে।