ময়মনসিংহ শহরের বিদ্যুৎ বিভাগের বিক্রয় ও বিতরণ (দক্ষিণ) পিডিবি-এর নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত রায়ের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় গ্রাহক ও সচেতন মহলের দাবি, তিনি বিভিন্ন কৌশলে সাধারণ গ্রাহকদের হয়রানি করে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ আদায় করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য গ্রাহকরা যখন অফিসে মিটার আনতে যান, তখন নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত রায় নানা অজুহাতে তাদের হয়রানি করেন। অভিযোগ রয়েছে, নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করেও গ্রাহকরা সহজে বিদ্যুৎ সংযোগ পান না। তবে ঘুষের বিনিময়ে তিনি নিয়ম-বহির্ভূতভাবেও সংযোগ প্রদান করেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুব্রত রায়ের নেতৃত্বে একটি দালাল সিন্ডিকেট কাজ করছে, যারা অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বিশেষ করে পুরনো এনালগ মিটারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল কম দেখিয়ে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগও উঠেছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নথিপত্রে গড়মিল তৈরি করে অনেক গ্রাহকের বিল কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রেললাইন সংলগ্ন বা সরকারি জায়গায় গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনাগুলোতে ঘুষের বিনিময়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে, বাণিজ্যিক গ্যারেজ, অটোরিকশা চার্জিং স্টেশনসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনায় এ ধরনের সংযোগ দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা, যারা নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে চেয়েছেন, জানিয়েছেন, সুব্রত রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা কঠিন। একজন কর্মকর্তা বলেন, তিনি অত্যন্ত কৌশলীভাবে ঘুষ নেন, কোনো কাগজে-কলমে প্রমাণ রাখেন না। তার অধীনে কোনো কাজই ঘুষ ছাড়া হয় না।”
এই বিষয়ে অনিন্দ্যবাংলার সাথে কথা হলে প্রকৌশলী সুব্রত রায় জানান, এসব অভিযোগ মিথ্যা।
তবে ময়মনসিংহ শহরের সাধারণ মানুষ এই অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বিদ্যুৎ সেবার মানোন্নয়ন এবং সুব্রত রায়ের মতো দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
সচেতন মহল ও ভুক্তভোগীরা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে দ্রুত তদন্ত করে সুব্রত রায়কে অপসারণ ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।