সকল খবর ময়মনসিংহের খবর

ময়মনসিংহে ‘জুলাই চত্বর’ ঘোষণা, ছাত্র আন্দোলনের স্মৃতি সংরক্ষণের প্রতীক

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ১৫-৭-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০২৪

ঐতিহাসিক টাউন হল চত্বরকে ‘জুলাই চত্বর’ হিসেবে ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে স্মৃতিকে সংরক্ষণ ও সম্মান জানাতে আজ সোমবার বেলা ১১টায় এক আনুষ্ঠানিক আয়োজনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে বেলুন উড়িয়ে ‘জুলাই চত্বর’-এর উদ্বোধন করেন।

ময়মনসিংহ নগরের প্রাণকেন্দ্র টাউন হল মোড়টি বহুদিন ধরেই রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এখানে রয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ম্যুরাল–সংবলিত গোলাকার এক চত্বর। এই স্থানটিই গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সূচনাস্থল হওয়ায়, চত্বরটিকে নতুনভাবে নামকরণ করা হয়।

উদ্বোধনী আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার, শহীদ পরিবারের সদস্য, এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানের শুরুতে আন্দোলনে আত্মত্যাগকারী শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন ও দোয়া করা হয়।

বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ বলেন, “এই স্থান থেকেই ঐতিহাসিক জুলাই আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। সেই স্মৃতি ধরে রাখতে ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অনুপ্রেরণার জন্য টাউন হল মোড়কে ‘জুলাই চত্বর’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এটি হবে আমাদের চেতনার প্রতীক। কোনো অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে, আমরা এই চত্বর থেকেই প্রতিবাদ গড়ে তুলব।”

তবে আন্দোলনকারী ও এনসিপির জেলা কমিটির সদস্য মাহমুদুল হাসান বলেন, “টাউন হল মোড়কে জুলাই চত্বর হিসেবে ঘোষণার বিষয়টি আরও সুপরিকল্পিতভাবে হওয়া উচিত ছিল। এখানে নজরুল ও জয়নুলের ম্যুরাল আছে—এই শিল্প-সংস্কৃতির উপাদানের সঙ্গে আন্দোলনের স্মৃতি মেলানো একটি জটিলতা তৈরি করতে পারে। শহীদ সাগর চত্বর বা পুরাতন ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড এলাকাকে বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা যেত।”

জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম জানান, “ছাত্রদের দাবির প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে অবকাঠামোগত কোনো পরিবর্তন আপাতত করা হবে না। পাশাপাশি, একটি পূর্ণাঙ্গ ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ নির্মাণের জন্য ঢাকা বাইপাস এলাকায় জমি নির্ধারণ করা হয়েছে।”

চত্বরটির দুই প্রান্তে পৃথক সাইনবোর্ডে ‘জুলাই চত্বর’ লেখা হয়েছে এবং গোলাকৃতি কেন্দ্রস্থলেও নামটি স্থাপন করা হয়েছে। এটি নগরবাসীর মধ্যে নতুন করে আন্দোলনের স্মৃতি ও চেতনা জাগ্রত করেছে।