ময়মনসিংহ নগরের জয়নুল আবেদিন উদ্যানের মিনি চিড়িয়াখানায় একটি ভালুকের পায়ে পচন ধরেছে এবং তার শরীর থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রাণীটির সারিয়ে তোলা কঠিন, তবে চিকিৎসা চলবে।
২০১৩ সালে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গড়ে তোলা এই মিনি চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন ধরনের প্রাণী ছিল, যেমন হরিণ, কুমির, হনুমান, গাধা, অজগরসহ মোট ২৪ প্রজাতির প্রাণী। বর্তমানে সেখানকার প্রাণীর সংখ্যা ২৩। দর্শনার্থীরা ৩০ টাকা টিকিট কেটে চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করতে পারেন। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের জায়গায় এটি পরিচালিত হচ্ছে।
চিড়িয়াখানার কর্মী মিজানুর রহমান জানান, সাবেক কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমান এই চিড়িয়াখানার দেখাশোনা করতেন। তিনি গ্রেপ্তার হওয়ায় বর্তমানে চিড়িয়াখানাটি পরিচালনার দায়িত্ব তাঁর পরিবারের লোকজনের কাছে রয়েছে।
গতকাল সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, একটি খাঁচায় দুটি কালো রঙের ভালুক ছিল। এর মধ্যে একটি ভালুকের পায়ে পচন ধরেছে এবং তার পায়ের অংশবিশেষ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। স্থানীয়ভাবে ব্যবহৃত হলুদের গুঁড়া দিয়ে চিকিৎসার চেষ্টা করা হচ্ছে, তবে ভালুকটির অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের অধ্যাপক মো. রফিকুল আলম জানান, ভালুকটির শরীরে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে এবং তার সেরে ওঠার সম্ভাবনা খুবই কম। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, ভালুকটিকে অন্যত্র স্থানান্তর করা উচিত, যাতে অন্য প্রাণীটির মধ্যে রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা কমে যায়।
চিড়িয়াখানার কর্মী কামাল হোসেন জানান, ২০১৩ সালে ছোট অবস্থায় আনা দুটি পুরুষ ভালুকের মধ্যে একটি অন্যটি আক্রমণ করেছে, যার ফলে বর্তমান পায়ে এই ধরনের ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় প্রাণী সম্পদ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেয়ার পরও পায়ের ক্ষত বাড়তে থাকে। তবে তিনি দাবি করেন, তারা কখনো গাফিলতি করেননি এবং প্রাণীগুলোর সুরক্ষা নিয়ে সবসময় সচেতন রয়েছেন।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সচিব সুমনা আল মজিদ বলেন, সিটি করপোরেশন শুধুমাত্র জমি বরাদ্দ দিয়েছে, প্রাণী সুরক্ষা এবং চিকিৎসার দায়িত্ব তাদের নয়। তিনি জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভালুকটির চিকিৎসা করতে বলা হয়েছে, এবং যদি তারা চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে বা প্রাণীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়, তবে ইজারা বাতিলসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মিনিস্ট্রি থেকে নেয়া তথ্য অনুযায়ী, চিড়িয়াখানার বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভালুকটির চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে।