দুই দফায় প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই পৌঁছাতে পারেনি। এখনো প্রায় ৩ কোটি বই ছাপানো হয়নি এবং প্রায় ৩ কোটি বই মান যাচাই ও অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। বর্তমানে শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় মাস চলছে, তবে অনেক শিক্ষার্থী আংশিক বই পেয়েছে, আর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বই না পাওয়ার কারণে হতাশ।
এনসিটিবি প্রথমে জানায় যে, জানুয়ারি মাসের মধ্যে সব বই সরবরাহ করা হবে, পরে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে তা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা সিলেবাসে পরিবর্তন এনে বিশেষ সিলেবাস চালুর পরামর্শ দিয়েছেন।
পাঠ্যবই বিতরণের বিলম্বের কারণ হিসেবে জানা গেছে, এবারের শিক্ষাক্রম পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে পুরোনো শিক্ষাক্রম অনুযায়ী বই ছাপানো হচ্ছে, তবে দরপত্র, অনুমোদন এবং চুক্তির কাজেও দেরি হয়েছে। কাগজ সংকটও অন্যতম বড় সমস্যা। গত ডিসেম্বরে কাগজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মুদ্রণকারীরা চীন থেকে কাগজ আমদানি করছেন, তবে সব কাগজ এখনও পাওয়া যায়নি।
বর্তমানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ৪ কোটির মতো বই ছাপানো হচ্ছে। তবে এখনও অনেক বই বিতরণ করা হয়নি। এনসিটিবির একজন সদস্য জানিয়েছেন, উপজেলায় পাঠ্যবই পৌঁছানোর কাজ চলছে এবং শীঘ্রই স্কুলগুলোতে পাঠ্যবই বিতরণ করা হবে।
এদিকে, কাগজের সংকট নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর জানা গেছে, কাগজের দাম বৃদ্ধি ও কৃত্রিম সংকটের কারণে মুদ্রণকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ছোট মুদ্রণপ্রতিষ্ঠানগুলো আরও বড় সমস্যায় পড়েছে, কারণ তাদের পক্ষে কাগজ কিনে বই ছাপানো সম্ভব হচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে শিক্ষা পঞ্জিতে পরিবর্তন আনা এবং বিশেষ সিলেবাস চালু করা প্রয়োজন। ফলে মৌলিক বিষয়গুলো বাদ না পড়ে শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে পড়াশোনা নিশ্চিত করা যাবে।
শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, বই না পেলে শিক্ষার্থীদের পড়ানো খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, অভিভাবক ঐক্য ফোরাম রমজানের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে ক্লাস নেওয়ার দাবি জানালেও, শিক্ষা মন্ত্রণালয় তা নিয়ে কোনো আলোচনা করেনি।
এছাড়া, মাউশি, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের কোনো মাথাব্যথা নেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই না থাকলে তারা ছুটিতে কীভাবে পড়বে তা নিয়ে।