রাজনীতিকে ‘জঘন্য’ বলা ট্রাম্পই আবার হোয়াইট হাউসে
- আপলোড তারিখঃ 31-12-24 ইং |
- নিউজটি দেখেছেনঃ 100003 জন
রাজনীতিকে ‘জঘন্য’ বলা ট্রাম্পই আবার হোয়াইট হাউসে
পরনে নীল স্যুট-লাল টাই। হাঁটুর ওপর হাত রেখে যেন বহু দূরের কিছু দেখছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কী দেখছেন তিনি? হয়তো আমেরিকার ভবিষ্যৎ, অথবা পুরো বিশ্বের। সম্প্রতি এমনই এক প্রচ্ছদ ছাপা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী টাইম সাময়িকীতে। তারা এবার ট্রাম্পকে ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ বা বর্ষসেরা ব্যক্তি নির্বাচিত করেছে।
ট্রাম্প বর্ষসেরা না হয়ে যাবেনই–বা কেন। বছরজুড়ে তাঁকে ঘিরে কম কাণ্ড তো ঘটেনি! সাবেক প্রেসিডেন্ট হয়েও আদালতের ‘কাঠগড়ায়’ দাঁড়াতে হয়েছে। কয়েক গন্ডা ফৌজদারি অভিযোগ নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর কান ছুঁয়ে গেছে আততায়ীর গুলি। পরে আবারও হত্যাচেষ্টা হয়েছে। আর এতকিছুর পরও তিনি বিরাট জয়ের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। আবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন তিনি।
এর আগে ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন রিপাবলিকান দলের ট্রাম্প। ২০২০ সালে আবার নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে ডেমোক্রেটিক দলের জো বাইডেনের সামনে ধোপে টেকেননি। এবারের ২০২৪ সালে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে দাঁড়িয়ে জয় পেয়েছেন। এমন ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে মাত্র একবারই ঘটেছিল, তা-ও প্রায় দেড় শ বছর আগে। ১৮৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ২২তম প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন গ্রোভার ক্লেভারল্যান্ড। মাঝে এক মেয়াদ বিরতির পর ১৮৯২ সালে আবার হোয়াইট হাউসে ঠিকানা হয়েছিল তাঁর।
অতীতের কথা যখন উঠল, তখন ট্রাম্পের অতীতটা না হয় একটু ঘেঁটে দেখা যাক। তারপর না হয় বর্তমান নিয়ে আলোচনা করা যাবে। জীবনের কম পথ তো পাড়ি দেননি তিনি। বয়স হয়েছে ৭৮ বছর। আগামী ২০ জানুয়ারি তিনি সবচেয়ে বেশি বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ৮২ বছর বয়সী জো বাইডেন যখন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন, তখন তাঁর বয়স ছিল ট্রাম্পের তুলনায় কয়েক মাস কম।
‘রাজনীতির জীবন জঘন্য’
রাজনীতিতে পা রাখার আগে ট্রাম্প ছিলেন পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী। ছেলেবেলায় দুষ্টুমির কারণে পাঠানো হয়েছিল মিলিটারি স্কুলে। এরপর পড়াশোনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব পেসনিলভানিয়ায়। বাবা ফ্রেড ট্রাম্প ছিলেন নিউইয়র্কের মস্ত আবাসন ব্যবসায়ী। ৪৩ সালে তাঁর মৃত্যুর পর ব্যবসার দেখভাল শুরু করেন ট্রাম্প। এরপর ব্যবসা বহুগুণ বাড়িয়েছেন। দেদার গড়েছেন ক্যাসিনো, কনডোমিনিয়াম, গলফ কোর্ট আর হোটেল। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে ব্যবসা ছড়িয়েছে ভারত, তুরস্ক এবং ফিলিপাইনেও।
ব্যবসার বাইরেও নানা শখ মিটিয়েছেন ট্রাম্প। আয়োজন করেছেন সুন্দরী প্রতিযোগিতার। সংবাদমাধ্যম এনবিসিতে ‘দ্য অ্যাপ্রেন্টিস’ নামের এক রিয়েলিটি শোর উপস্থাপক ছিলেন। লিখেছেন বই। অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্রে। বিয়েও করেছেন দু-দুইবার। তবে সে সময় একটি জিনিস তাঁকে টানেনি—রাজনীতি। ১৯৮০ সালে ট্রাম্পের বয়স ছিল ৩৪ বছর। তখন এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, রাজনীতির জীবন নাকি ‘জঘন্য’। আর ‘সবচেয়ে যোগ্যরা’ নাকি ব্যবসায়ে নামেন।
তবে মন বদলাতে খুব বেশি সময় নেননি ট্রাম্প। ১৯৮৭ সাল নাগাদ তাঁর কার্যকলাপে মনে হয়েছিল, পরের বছরই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যোগ দিতে পারেন তিনি। এরপর ২০০০ সালে রিফর্ম পার্টি ও ২০১২ সালে রিপাবলিকান পার্টির হয়ে নির্বাচনের লড়াইয়ে নামার চেষ্টা করেছিলেন। শেষমেশ ২০১৬ সালে এসে বাজিমাত করেন। ডেমোক্রেটিক দলের হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো হোয়াইট হাউসের গদিতে বসেন তিনি।
ষোলোর কাঁটা চব্বিশে
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ ছিল বেশ নাটকীয়। আলোচিত-সমালোচিত নানা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। জলবায়ু ও অভিবাসন নিয়ে তাঁর সিদ্ধান্ত বিতর্কিত হয়েছিল। অভিশংসনের মুখেও পড়েছিলেন। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়েন ২০২০ সালে করোনার সময়। এই মহামারি মোকাবিলায় তাঁর পদক্ষেপ মার্কিনদের মধ্যে ব্যাপক হতাশার সৃষ্টি করেছিল। আর করোনার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছিল, তার ধাক্কায় ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা অনেকাংশে কমেছিল।
এর জন্য খেসারতও দিতে হয়েছিল ট্রাম্পকে। ২০২০ সালের নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি। এর বাইরেও গত এক দশকে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, যেগুলো ২০২৪ সালে নির্বাচনের লড়াইয়ের ট্রাম্পের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বলা চলে তাঁর বিরুদ্ধে করা চারটি মামলার কথাই। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ২৩৪ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বর্তমান বা সাবেক কোনো প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়েছিল। এসব মামলা নিয়ে ৫ নভেম্বর নির্বাচনের আগপর্যন্তও ট্রাম্পকে আদালতে দৌড়ঝাঁপ করতে হয়েছে। তবে বরাবরই তাঁর দাবি ছিল, রাজনীতির মাঠে পরাস্ত করতেই এসব মামলা করেছে বাইডেন সরকার।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর দুটিতে তিনি দোষী সাব্যস্তও হয়েছিলেন। সর্বশেষ গতকাল সোমবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের ফেডারেল আদালত লেখক ই জ্যঁ ক্যারলের যৌন কেলেঙ্কারির মামলায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের ৫০ লাখ ডলার অর্থদণ্ডের রায় বহাল রেখেছেন।
যৌন কেলেঙ্কারির আরেক মামলায়ও রায় হয় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। ওই মামলায় বলা হয়, সাবেক পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছিল ট্রাম্পের। ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে স্টর্মির মুখ বন্ধ রাখতে তাঁকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছিলেন তিনি। সেই অর্থের কথা আবার ট্রাম্পের আইনজীবী আয়করের হিসাবে গোপন করেছিলেন। এ নিয়ে ২০২৪ সালের ৩০ মে আদালতের রায় যায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।
এ ছাড়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফল বদলানোর চেষ্টা, সরকারি গোপন নথি নিজের কাছে রাখা এবং জর্জিয়ার নির্বাচনের ফলাফলে হস্তক্ষেপের মামলা চলছিল আদালতে।
পর্ন তারকাকে ঘুষের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী, ট্রাম্পের নির্বাচনে লড়াই করার সুযোগ ছিল। নির্বাচনে জয়ের পর তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে সব মামলা থেকে নিজেকে অব্যাহতিও দিতে পারতেন। তবে সে পর্যন্ত যেতে হয়নি তাঁকে। গত ২২ নভেম্বর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে করা ঘুষের মামলার রায় স্থগিত করেছেন মার্কিন আদালত। দুই দিন বাদে ২৫ নভেম্বর নির্বাচনের ফল বদলানোর চেষ্টা এবং গোপন নথি সরানোর মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আর নির্বাচনের আগেই জর্জিয়ার নির্বাচনে ফলাফলে হস্তক্ষেপের মামলার কিছু অভিযোগ খারিজ করা হয়েছিল।
কান ছুঁয়ে গেল আততায়ীর গুলি
এবারের নির্বাচনে প্রথমে ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে মনোনীত প্রার্থী ছিলেন জো বাইডেন। তবে এই বয়সে তিনি আবার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব সামলাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কা ছিল। প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁর দলের অনেক নেতাও। এরই মধ্যে গত জুনে ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে নাস্তানাবুদ হন তিনি। এরপর না চাইলেও প্রার্থিতা ছাড়তে হয় বাইডেনকে। তাঁর জায়গায় আসেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। ট্রাম্পের সামনে অবশ্য এমন কোনো বাধা আসেনি। বলতে গেলে প্রার্থিতার প্রশ্নে দলের প্রাথমিক বাছাইয়ে (প্রাইমারি) তাঁর সামনে দাঁড়াতেই পারেননি কোনো রিপাবলিকান নেতা।
নির্বাচনী প্রচারের শুরু থেকেই বাইডেন আমলে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনীতি, কর্মসংস্থানের অভাব, অভিবাসী নীতি, গর্ভপাত আইন এবং ‘বিশ্বব্যাপী’ যুদ্ধ নিয়ে সমালোচনায় মুখর ছিলেন ট্রাম্প। বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ঘুরে ঘুরে বিষয়গুলো ভোটারদের কাছে তুলে ধরেছেন তিনি। সমাবেশের পর সমাবেশ করেছেন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোয়। ১৩ জুলাই পেনসিলভানিয়ায় এমনই এক সমাবেশে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান ট্রাম্প। বক্তৃতা দেওয়ার সময় আততায়ীর গুলি তাঁর কান ছুঁয়ে যায়। দ্রুত তাঁকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেন সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা। সে সময় রক্তাক্ত কান নিয়ে দৃঢ়চেতা ট্রাম্পের একটি ছবি বেশ সাড়া ফেলেছিল।
একে তো বাইডেনের সরে দাঁড়ানো, তারপর আবার ট্রাম্পের ওপর গুলি—দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে অনেকেই বলেছিলেন, এবার নির্বাচনে হয়তো বিজয়ীর হাসিটা রিপাবলিকানরাই হাসবেন। তখনো কেউ হয়তো ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি, দুই মাস বাদেই ট্রাম্পের ওপর আবার হামলার চেষ্টা হবে। ঘটনা গত ১৫ সেপ্টেম্বর ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচ। সেখানকার একটি মাঠে গলফ খেলছিলেন ট্রাম্প। তখন মাঠের বাইরে থেকে বন্দুকসহ একজনকে আটক করা হয়।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের ভাষ্যমতে, সেদিনও ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। ওই ঘটনার পর ট্রাম্প জোর গলায় বলেছিলেন, কিছুই তাঁকে দমাতে পারবে না। ৫ নভেম্বরের পর দেখা গেল, তাঁর সেই কথাই সত্যি হয়েছে।
মানচিত্রে লালের জোয়ার
নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী বদলের পরও রিপাবলিকানদের তুলনায় তাদের জনপ্রিয়তা বেশি ছিল, অন্তত বিভিন্ন জরিপের ফল তা-ই বলছিল। নির্বাচনের দিন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পর্যায়ে জনমত জরিপে ট্রাম্পের চেয়ে খুব সামান্য হলেও এগিয়ে ছিলেন কমলা হ্যারিস। দোদুল্যমান সাত অঙ্গরাজ্যের (অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিন) বেশির ভাগেও তাঁর প্রতাপ ছিল। এসব থেকে সবাই অনেকটা ধরেই নিয়েছিলেন, কমলা প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস বদলে দিতে যাচ্ছেন। তবে পাশার দান বদলে যেতে শুরু ভোট গ্রহণ শেষে ৫ নভেম্বর রাতে ফল গণনার সময় থেকেই।
যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যে মোট ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট রয়েছে। ৫ নভেম্বরের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মূলত ইলেকটরেটদের বেছে নিয়েছেন ভোটাররা। সেদিন রাত ও ৬ নভেম্বর সকালে যখন বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের ফল আসা শুরু করে, তখন এক ধাক্কায় ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে অনেকটাই এগিয়ে যান ট্রাম্প। এরপর কমলা আর তাঁর ধারে-কাছেও যেতে পারেননি। শেষ পর্যন্তে দেখা যায়, ৩১২টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়েছেন ট্রাম্প। কমলা পেয়েছেন ২২৬টি। হোয়াইট হাউসে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন হয় ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের। আগামী মাসের শুরুর দিকে ট্রাম্পের পক্ষের ইলেকটরেটরা তাঁকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করবেন। আর ২০ জানুয়ারি শপথ নিয়ে পাকাপাকিভাবে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বুঝে পাবেন।
নির্বাচনে ট্রাম্প যে কত বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছেন, তা বোঝা যায় ফলাফল প্রকাশের পর তৈরি যুক্তরাষ্ট্রের মানচিত্রভিত্তিক পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে। পুরো মানচিত্রই যেন রিপাবলিকান দলের প্রতীক লাল রঙে ছেয়ে গিয়েছিল। এ জোয়ারে ভেসেছেন ট্রাম্প নিজেও। প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের শেষ মেয়াদকে মনমতো কাজে লাগাতে ক্ষমতায় বসার আগে নানা তৎপরতা শুরু করে দিয়েছেন।
অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে এরই মধ্যে ট্রাম্প কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন। আসন্ন প্রশাসন সাজাচ্ছেন নিজের পছন্দের মানুষদের নিয়ে। তাঁদের মধ্যে তুলসী গ্যাবার্ডসহ বিতর্কিত অনেকেই রয়েছেন। ট্রাম্পের বিশ্বাস, এবারের নির্বাচনে যেহেতু রিপাবলিকানরা কংগ্রেসের দুই কক্ষ-সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছেন, তাই তাঁর বেছে নেওয়া লোকজনই প্রশাসনে জায়গা পেতে চলেছেন।
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার আগে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বদল আনার চেষ্টা করছেন। যেমন দীর্ঘ তিন বছর ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধ থামাবেন বলে আগে থেকেই ঘোষণা দিয়েছিলেন। এ নিয়ে বর্তমানে আলোচনা চলছে। মধ্যপ্রাচ্য নিয়েও এরই মধ্যে তৎপর হয়েছেন তিনি। যদিও ইসরায়েল ইস্যুতে তাঁর সমর্থন এককাট্টা থাকবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আরও কঠোর হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। নির্বাচনে জয়লাভের আগে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়েও মন্তব্য করেছিলেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে। মোটা দাগে বলতে গেলে, শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, ক্ষমতায় বসার আগেই পুরো বিশ্ব নিয়ে ভাবনা শুরু করেছেন তিনি। ঠিক যেন টাইম সাময়িকীর সাম্প্রতিক সংখ্যার ভাষায়—‘আমরা এখন ট্রাম্পের যুগে বসবাস করছি।’
তথ্যসূত্র: টাইম, বিবিসি, সিএনএন