ঝাল,ঝোল, কিংবা অম্বলÑযে-কোনো রান্নায় এখনো সরষের তেলের বিকল্প নেই। রান্নার স্বাদই শুধু বাড়ায় না, স্বাস্থ্যের জন্যও খুবই উপকারী এই তেল।
*
সরষের তেলে থাকে বিটা ক্যারোটিন, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন ‘এ’ এবং
‘ই’, আলফা ওমেগা থ্রি এবং আলফা ওমেগা সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন, নায়াসিন,
ম্যাংগানিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যে-কোনো ব্যক্তির সুস্থ থাকার জন্য এই
উপাদানগুলো জরুরী। কাজেই রান্নার মাধ্যমে এই তেল শরীরে গেলে আসলে লাভই হয়।
* সরষের তেল খুব ভালো স্টিমুলেন্ট হিসাবে কাজ করে। এই তেলে মাসাজ করলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি হয়। হজম ক্ষমতা-ও-বাড়ে।
*
যাঁদের খিদে তেমন হয় না, হজমের অসুবিধা থাকে, তাঁদেরও সরষের তেল খাওয়া
দরকার। স্টমাক এবং ইনটেস্টাইনকে ইরিটেট করে খিদে ভাব বৃদ্ধি করে।
*
সরষের তেলে আছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টি। ফলে শরীরে ব্যাকটেরিয়া
সংক্রমণ প্রতিরোধ করে বিশেষ করে কোলন, ডাইজেস্টিভ সিস্টেম এবং ইউনারি
ট্র্যাক্ট ইনফেকশন থেকে দূরে রাখে এই তেল।
* শরীরে ফাংগাল ইনফেকশনÑবিশেষ করে বর্ষাকালে খুব সাধারণ সমস্যা। নিয়মিত
সরষের তেল মাখলে ফাংগাল ইনফেকশন প্রতিরোধ করা সম্ভব , কারণ এই তেলে আছে
অ্যালিনা আইসোথায়োসায়নেট। এই উপাদান ফাংগাল ইনফেকশন সারাতে পারে। * সরষের
তেলে কিছু ফ্যাটি অ্যাসিড Ñযেমন ওলিক অ্যাসিড এবং লিনোলিক অ্যাসিড থাকে। এই
দুই ফ্যাটি অ্যাসিড একত্রে থাকার জন্য হেয়ার ভাইটাইলাইজার হিসাবে কাজ করে।
স্বাভাবিকভাবেই এই তেল মাথার স্ক্যাল্পে মাসাজ করার ফলে রক্ত সঞ্চালন
বৃদ্ধি পায়। চুলের গোড়ায় পুষ্টি বৃদ্ধি হয় বলে চুল পড়া রোধ করে। দীর্ঘদিন
ধরে সরষের তেল চুলে মাখলে চুল ঘন হয়। তবে চুলের রং খানিকটা বাদামি হওয়ার
সম্ভাবনা থাকে।
* সরষের তেল মাসাজ করার ফলে ঘর্মগ্রন্থিগুলো স্টিমুলেট
হয় এবং বেশি করে ঘাম বের হয়। ঘাম শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ফলে শরীরের
তাপমাত্রা কমে । শরীরকে টক্সিনমুক্ত করার একটা সু-মাধ্যম হল সরষের তেল
মাসাজ করা।
* সরষের তেলকে স্বাস্থের জন্য অলরাউন্ডার টনিক বলা হয়। মাসল-এর শক্তি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বরায় এই তেল।
* সরষের তেল মাসাজ করলে আর্থারইটিস থেকেও দূরে থাকা যায়।
* বর্তমানে
করোনারি হার্ট ডিডিজ বা সিএইচডি হল মৃত্যুর প্রধান কারণ। এই হার্ট ডিডিজের
জন্য দায়ী কোলেস্টেরল। নিয়মিত সরষের তেল খাওয়ার ফলে খারাপ কোলেস্টরলের
পরিমাণ কমে। ফলে দূরে থাকা যায় হার্ট ডিডিজ থেকে।
* সরষের তেলের সবচেয়ে
বড় উপকারের দিক হল এতে ওমেগা-থ্রি এবং ওমেগা সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিডের
ভারসাম্য না-থাকলে হার্ট অ্যাটাক থেকে শুরু করে, ক্যানসার, ইনসুলিন
রেজিস্টেন্স, ডিপ্রেশন, প্রিম্যাচিওর এজিং, ডায়াবেটিস, হাঁপানি,অ্যালঝাইমার
ইত্যাদি যে-কোনো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কাজেই নিয়মিত সরষের তেল খেলে এত কিছু সমস্যা অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব।