সকল খবর বিদেশের খবর

ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে?

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ১০-৫-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০০৮

কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন ভারতীয় পর্যটকের নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে এই হামলার জন্য দায়ী করে, আর তারই জেরে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা দ্রুত বাড়তে থাকে।

হামলার পরপরই ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ কড়া পদক্ষেপ নেয়, যার মধ্যে অন্যতম হলো ঐতিহাসিক সিন্দু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিত করে এবং ভারতের জন্য নিজেদের আকাশসীমা নিষিদ্ধ করে দেয়। পাকিস্তান এই চুক্তি স্থগিতকেই কার্যত যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে আখ্যায়িত করে।

এরপর কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর টানা প্রায় বারো রাত ধরে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি চলে। ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই একে অপরকে এর জন্য দায়ী করে। পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে যখন গত মঙ্গলবার ভারত পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরসহ নয়টি স্থানে ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ভারত দাবি করেছে, এই অভিযানে অন্তত ১০০ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তান জানিয়েছে, ভারতের হামলায় ৩৮ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছে। পাকিস্তান আরও দাবি করেছে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।

এদিকে পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে ভারতের নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ১৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। উত্তেজনা বাড়তে থাকায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এবং সামরিক বাহিনী ভারতকে পাল্টা জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।

শনিবার সকালে পাকিস্তান জানায়, তারা ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর জবাবে ‘অপারেশন বানিয়ান মারসুস’ চালু করেছে। পাকিস্তান দাবি করেছে, এই অভিযানে ভারতের পাঠানকোট, উধমপুরসহ একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে।

বিবিসি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভোরে শ্রীনগরে একাধিক বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। শহরে এখন সম্পূর্ণ ব্ল্যাকআউট চলছে। অন্যদিকে ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের ৩২টি বিমানবন্দর থেকে বেসামরিক বিমান চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।

এদিকে পাকিস্তানের করাচির ফায়সাল হাইওয়ে এবং গুলিস্তাঁ-এ-জওহার এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভোরবেলা তারা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনেছেন এবং আকাশে আলো ঝলকানি দেখেছেন।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলছেন, পরমাণু অস্ত্রধারী দুই প্রতিবেশী দেশের এমন পাল্টাপাল্টি সামরিক পদক্ষেপ পুরো উপমহাদেশকে এক ভয়াবহ যুদ্ধের মুখোমুখি করে তুলতে পারে।