যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, যা অনেক দেশ বাণিজ্য যুদ্ধ হিসেবে দেখছে। এর ফলে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ করা হয়েছে। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের রপ্তানি, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতের জন্য বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন।
প্রধান রপ্তানি বাজারগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম বড় বাজার, যেখানে বছরে প্রায় ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়, যার বড় অংশ তৈরি পোশাক। ২০২৪ সালে বাংলাদেশি পোশাকের রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলারে। নতুন শুল্ক আরোপের ফলে বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা যে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হবে, তা স্পষ্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসে বুধবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “আজকের দিনটি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পরিচিত হবে,” এবং এই সিদ্ধান্তকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক শক্তির পুনরুদ্ধার হিসেবে তুলে ধরেন। ট্রাম্পের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য বাধার মুখে ছিল এবং আজকের সিদ্ধান্ত সেই বাধা দূর করবে।
এই শুল্ক আরোপের আওতায় ভারতের পণ্যের ওপর ২৬%, পাকিস্তানের পণ্যের ওপর ২৯%, এবং চীনা পণ্যের ওপর ৩৪% শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্য ওপর ২০%, ভিয়েতনামের ৪৬%, শ্রীলঙ্কার ৪৪%, এবং থাইল্যান্ডের পণ্যের ওপর ৩৬% শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। বাংলাদেশি পণ্যের ওপর এই উচ্চ শুল্ক আরোপের ফলে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন যে, রপ্তানি খাতে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হতে পারে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ক্ষতির অভিযোগ তুলেছেন এবং মেধাসত্ত চুরির অভিযোগও করেছেন। তিনি জানান, অন্য দেশের পণ্যের ওপর অশুল্ক বাধার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই নতুন শুল্কের ফলে আমেরিকা ফার্স্ট নীতির আওতায় দেশটির অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে বলে ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেছেন, তবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এই পদক্ষেপের ফলে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন।
সূত্র : রয়টার্স