সকল খবর দেশের খবর

৩১ জুলাইয়ের মধ্যেই জাতীয় সনদ চায় কমিশন, জানালেন আলী রিয়াজ

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ২০-৭-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০১৩

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গড়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। একই সঙ্গে, চলমান সংলাপের ধারাবাহিকতায় আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যেই একটি জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

রবিবার (২০ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৫তম দিনের আলোচনায় এসব কথা বলেন আলী রীয়াজ। সংলাপ শুরুর আগে বক্তব্যে তিনি জানান, আলোচনার মূল এজেন্ডা ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ও প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকা সংক্রান্ত বিষয়।

আলী রীয়াজ বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে একটি জাতীয় সনদের জায়গায় পৌঁছানো। এটা আমাদের ইচ্ছা, আপনাদের ইচ্ছা এবং জনগণের প্রত্যাশার সমন্বয়। আমরা সবাই মিলেই এই লক্ষ্য অর্জন করতে চাই।”

আলোচনায় উচ্চকক্ষ (দ্বিতীয় কক্ষ) গঠনের প্রসঙ্গ উঠে আসলে আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব কমিশনের ওপর অর্পণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, “কমিশন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা করছে। আশা করেছিলাম শুক্র ও শনিবার সিদ্ধান্ত জানাতে পারব, কিন্তু বিভিন্ন মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আরও কিছু সময় প্রয়োজন। আমরা দু-তিন দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারব।”

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রসঙ্গে আলী রীয়াজ বলেন, “গত ১৪ বছরে এ ব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য যে সংগ্রাম হয়েছে, তাতে আমরা সবাই যুক্ত ছিলাম। আজকের আলোচনায় দেখা যাচ্ছে, আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে একমত হয়েছি। এখন প্রধান উপদেষ্টার কাঠামো নিয়েও আমরা একমতের দিকে এগোচ্ছি। কমিশন শুধু আশাবাদী নয়, বিশ্বাস করে যে এটা সম্ভব।”

তিনি আরও জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে কমিশন একাধিক প্রস্তাব পেয়েছে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বিএনপি, এনসিপি এবং জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে কমিশনের কাছে আলাদাভাবে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এসব প্রস্তাব পর্যালোচনা করে এবং বিগত কয়েক দিনের আলোচনা বিশ্লেষণ করে একটি সমন্বিত প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে, যা আজকের বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং ড. আইয়ুব মিয়া।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই সংলাপ ও আলোচনাকে দেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য ও বাস্তবসম্মত জাতীয় সনদ তৈরি হলে তা দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক দিক নির্দেশ করবে।