দেশের উচ্চ ও অধস্তন আদালতে মামলাজট অব্যাহতভাবে বাড়ছে, সরকারের নানামুখী উদ্যোগ সত্ত্বেও সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। গত আগস্ট থেকে বিচার বিভাগ সংস্কারের অংশ হিসেবে বিচারক নিয়োগ, অধ্যাদেশ জারি এবং আদালতগুলোর আইন কর্মকর্তাদের বদলি করলেও মামলাজট কমানোর ক্ষেত্রে তা পর্যাপ্ত ফলপ্রসূ হয়নি। ২০২৪ সালে আদালতে মামলার সংখ্যা দুই লাখ ১৭ হাজার ৪টি বেড়েছে, যার মধ্যে এক লাখ ৩৫ হাজার ৬৪১টি মামলাই শেষ ছয় মাসে বেড়েছে।
বর্তমানে দেশের সব আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৪৫ লাখ ১৬ হাজার ৬০৩টি, যা গত এক যুগে সর্বোচ্চ। ২০১৫ সাল থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মামলার সংখ্যা বাড়ার হার ক্রমেই বেড়েছে। সুপ্রিম কোর্টের তথ্য অনুসারে, আপিল বিভাগে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩১ হাজার ১২০টি, এবং হাইকোর্টে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৬৫১টি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে বেশিরভাগ মামলা দেওয়ানি এবং ফৌজদারি।
এছাড়া, সরকারের উদ্যোগের পরও মামলা নিষ্পত্তির তুলনায় মামলা দাখিলের সংখ্যা বেশি হওয়ায় জট লাঘবের কোনো সুষ্পষ্ট উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। ২০১৬ থেকে ২০২2 সাল পর্যন্ত কিছুটা মামলাজট কমলেও, ২০২৪ সালের শেষ ছয় মাসে পরিস্থিতি আবার খারাপের দিকে গেছে।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচার বিভাগের সংস্কার কমিশন এবং আইন কমিশন সংশ্লিষ্ট সুপারিশ পাঠিয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারকে দ্রুত একটি কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে, বিশেষত লঘু অপরাধ এবং পারিবারিক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আদালত বাইরের ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবীরা বলছেন, আগামী ৫০ বছরেও যদি একইভাবে চলতে থাকে, তবে বিচারপ্রার্থীরা মামলাজট থেকে মুক্তি পাবেন না। তবে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিচার বিভাগ সংস্কারে রোডম্যাপ বাস্তবায়ন হলে আশা করা যায়, মামলাজট কিছুটা কমবে।