ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত বুথে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট প্রদান করছেন। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসজুড়ে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। তবে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ভোটারদের মধ্যে বিরক্তি ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র—শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, কার্জন হল, উদয়ন স্কুলসহ—ঘুরে দেখা যায়, কেন্দ্রের প্রবেশমুখে প্রার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রার্থীরা ও তাদের সমর্থকরা ভোটারদের হাতে লিফলেট, কার্ড ও দলীয় প্রার্থীদের তালিকা তুলে দিচ্ছেন। এতে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। অনেকে প্রকাশ্যে অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন আচরণবিধি অনুযায়ী, ভোটকেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে কোনো ধরনের প্রচার চালানো নিষিদ্ধ। এছাড়া, ৭ সেপ্টেম্বর থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে সব ধরনের প্রচার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন।
কার্জন হল এলাকায় ছাত্রদল-সমর্থিত ফজলুল হক মুসলিম হল ইউনিটের নেতাকর্মীদের লাইনে দাঁড়ানো শিক্ষার্থীদের কাছে ভোট চাইতে দেখা যায়। একই চিত্র ছিল সিনেট ভবনের সামনেও, যেখানে একাধিক প্রার্থী লিফলেট বিতরণ করেন। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তারা এসে তাদের সরিয়ে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, “নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, ভোটকেন্দ্রের একশ মিটারের মধ্যে কোনো প্রচার চালানো যাবে না। যারা এ নিয়ম ভঙ্গ করবে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ডাকসুর মানবসেবা সম্পাদক প্রার্থী এ বি জোবায়ের অভিযোগ করেন, “শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের সামনে ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থীরা কৃত্রিম জটলা তৈরি করে ফুল প্যানেলের লিস্ট বিতরণ করছে। আমি প্রতিবাদ করতে গেলে তারা আমার সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়।”
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান নির্বাচনের পর্যবেক্ষক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফাও।
জহুরুল হক হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ফারুক শাহ বলেন, “আমরা বিভিন্ন কেন্দ্রের সামনে থেকে প্রার্থীদের সরিয়ে দিচ্ছি। জহুরুল হক হল ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ভোটারদের আলাদা করে দেওয়া হয়েছে, যাতে জটলা তৈরি না হয়।”
অন্যদিকে, দিনের শুরু থেকেই ভোটার ও প্রার্থীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। দীর্ঘদিনের প্রচার-প্রচারণার ফল হিসেবে নির্বাচনী দিনেও ক্যাম্পাসজুড়ে ছিল প্রাণবন্ত পরিবেশ।
তবে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠুতা রক্ষায় নির্বাচনী বিধিমালা যথাযথভাবে পালন করা জরুরি বলে মনে করছেন সচেতন শিক্ষার্থীরা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।