অন্যান্য খবর আইন-আদালত

ধুনটে উচ্ছেদ অভিযানে বাধা: ভূমি কর্মকর্তাকে ঘেরাও করে স্ট্যাম্পে সই নেওয়ার অভিযোগ

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ৬-৯-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫১৭৪

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় সরকারি উচ্ছেদ অভিযানের সময় সরকারি কর্মকর্তার ওপর হামলা ও জিম্মি করে স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার পিরাপাট বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, ধুনট উপজেলার জয়শিং-বগুড়া সড়কের পাশে পিরাপাট বাজার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অধিগ্রহণ করা জমিতে অবৈধভাবে স্থাপনা গড়ে তুলছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা সুকলু মিয়া ও তার সহযোগীরা। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়ে ধুনট উপজেলা প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে বুধবার বিকেল ৪টার দিকে নিমগাছি ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন উচ্ছেদ অভিযানে গেলে সুকলু মিয়া, শাহাদুল হোসেন মন্ডল, গোদা মন্ডল, আব্দুল কাফী, সফিকুল ইসলাম, ইংরেজ উদ্দিন ও কালুমিয়া—এই সাতজনের নেতৃত্বে অন্তত ৪০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল তাকে ঘিরে ফেলে।

ভূমি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করেন, তাকে মারধর করে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় এবং জোর করে ৩০০ টাকার একটি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা পর, সন্ধ্যা ৭টার দিকে ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তিনি মুক্তি পান। পরে পুলিশ সেই স্ট্যাম্পটি জব্দ করে।

তবে ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম বলেন, “ভূমি কর্মকর্তাকে আমাদের যাওয়ার আগেই ছেড়ে দেওয়া হয়। তাকে মারধর করা হয়নি, তবে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খৃষ্টফার হিমেল রিছিল বলেন, “একজন সরকারি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব পালনের সময় লাঞ্ছিত ও জিম্মি করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা। এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উচ্ছেদকৃত জায়গাটি ২০০৪ সালে সওজ অধিগ্রহণ করে এবং সুকলু মিয়া সরকার নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০,৬১৬.৭৫ টাকা উত্তোলন করেন। এরপরও ওই জমিতে অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ করে চলাচলের পথ দখল করায় জনদুর্ভোগ বাড়ে।

ঘটনাটির পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।