এক ব্যক্তি টানা দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না—জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত এই রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করেছে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তবে বিরতির পর আবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ থাকা উচিত বলে মত দিয়েছে বিএনপি।
রোববার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের বৈঠকের মধ্যাহ্ন বিরতিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, “এক ব্যক্তি টানা দুইবার প্রধানমন্ত্রী হবেন না—এ বিষয়ে বিএনপি একমত। তবে জনগণ যদি বিরতি দিয়ে কাউকে আবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করতে চায়, সেই অধিকার সংকুচিত করা উচিত নয়।”
তিনি জানান, এই প্রস্তাব নিয়ে কমিশনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো আলোচনা হয়নি। তবে দলের অভ্যন্তরীণ অবস্থান এ বিষয়ে পরিষ্কার।
সংস্কার প্রক্রিয়ার বিভিন্ন প্রস্তাব নিয়ে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, “পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বাবস্থায় ফিরতে চায় বিএনপি। তবে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত নয় দলটি।” তিনি যুক্তি দেন, “এতদিন পরে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের কোনো বাস্তব প্রয়োজনীয়তা নেই।”
বিএনপির পক্ষ থেকে মৌলিক অধিকার প্রসঙ্গে একমত পোষণ করে বলা হয়, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দলটির পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবেও একমত বিএনপি। তবে সংগঠনটি মনে করে, “যা রাষ্ট্রের পক্ষে বাস্তবায়নযোগ্য, তা-ই মৌলিক অধিকারে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।”
বৈঠকে বিএনপির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন সালাহউদ্দিন আহমদ। দলে আরও ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মো. ইসমাইল জবিহউল্লাহ, সাবেক সচিব আবু মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খান এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সহসভাপতি এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিএনপি ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে প্রথম দফার বৈঠকে বসেছিল। চলমান এই সংলাপকে রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেখছে উভয় পক্ষ।