অন্যান্য খবর রাজনীতি

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের চুক্তি বাতিল না করলে কঠোর কর্মসূচি; হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ১৯-৭-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০১০

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনসংক্রান্ত চুক্তিতে সই করায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনটির আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী এবং মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে সরকারের এই পদক্ষেপকে “গণইচ্ছার বিরুদ্ধে নেওয়া একতরফা সিদ্ধান্ত” আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে চুক্তি বাতিলের আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে তারা বলেন, “ওলামায়ে কেরাম ও ধর্মপ্রাণ মানুষের আপত্তি উপেক্ষা করে অন্তর্বর্তী সরকার যে চুক্তি করেছে, তা দেশের সার্বভৌমত্ব ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর আঘাত। আমরা এই চুক্তি বাতিলের জন্য সরকারকে সতর্ক করছি, অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।”

হেফাজতের দাবি, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস সাধারণত যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্রে স্থাপিত হয়। বাংলাদেশ কোনো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ নয়, বরং একটি স্থিতিশীল রাষ্ট্র। ফলে ঢাকায় এই অফিস স্থাপন প্রশ্নবিদ্ধ ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত বলে সংগঠনটি মনে করে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষার কথা বলে যেসব বিদেশি সংস্থা আগেও ইসলামিক পারিবারিক আইন, শরিয়া ও ধর্মীয় মূল্যবোধে হস্তক্ষেপ করেছে, জাতিসংঘের এই অফিস তাদের কর্মকাণ্ডের ভিত্তি হয়ে উঠতে পারে।”

তারা এলজিবিটি (সমকামী) অধিকারকে জাতিসংঘের মানবাধিকার নীতির অংশ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “নারীর অধিকার রক্ষার আড়ালে এই সম্প্রদায় বাংলাদেশে অপতৎপরতা চালাচ্ছে, যা দেশের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের পরিপন্থী।”

বিবৃতিতে হেফাজত ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে সংঘটিত ঘটনার কথা উল্লেখ করে জাতিসংঘের নীরবতা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে। তারা বলেন, “সেদিন শত শত আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ মানুষের ওপর নির্মম হামলা চালানো হয়েছিল, অথচ জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন সে বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেয়নি।”

এ ছাড়া ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকায় ইঙ্গিত করে তারা দাবি করে, “দেশে কথিত ‘জঙ্গি দমন’-এর নামে ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে, যা জাতিসংঘ কখনও প্রশ্ন তোলেনি। ফিলিস্তিনে গত ৩০ বছর ধরে জাতিসংঘের অফিস থেকেও কোনো বাস্তব পরিবর্তন আসেনি। বাংলাদেশকে দ্বিতীয় যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করতে আমরা দেব না।”

হেফাজতের নেতৃবৃন্দ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এখনো সময় আছে, জনগণের অনুভূতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে চুক্তিটি বাতিল করুন এবং দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির পথ পরিহার করুন। অন্যথায় দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।”