ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শনিবার (১৯ জুলাই) সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দলটির হাজারো নেতাকর্মী রাজধানীতে এসে জড়ো হন। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশের প্রথম অধিবেশনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
সমাবেশের শুরুতে পরিবেশিত হয় ইসলামি ভাবধারার সঙ্গীত ও 'জুলাই গণঅভ্যুত্থান'-ভিত্তিক গান। পরে দুপুর ১টা ২০ মিনিটে নামাজের বিরতির জন্য কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। আজানের পর উদ্যানের মূল মঞ্চ এবং মাঠজুড়ে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে নামাজ আদায় করেন জামায়াত নেতাকর্মীরা।
বিরতির পর বেলা ২টায় পুনরায় কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে মূল পর্বের সূচনা হয়। সমাবেশের শুরুতেই জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান সমবেত জনতাকে শুভেচ্ছা জানান। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন দলের নায়েবে আমির অধ্যাপক মজিবুর রহমান, ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, এটিএম আজহারুল ইসলাম, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে দলটি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাত দফা রাজনৈতিক দাবি উত্থাপন করে। দাবিগুলো হলো— নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ; অতীতের সব গণহত্যার বিচার; প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার; ‘জুলাই সনদ’ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন; জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পুনর্বাসন; আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (PR) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন এবং এক কোটিরও বেশি প্রবাসীর ভোটাধিকার নিশ্চিত করা।
নেতারা বলেন, জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে রাষ্ট্রীয় সংস্কার নিশ্চিত করতেই এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক চর্চা ও অংশগ্রহণের ক্ষেত্র তৈরি করতে রাজনৈতিক পরিবেশ সুস্থ ও সমতাভিত্তিক হওয়া জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তারা।
সমাবেশে বিপুল জনসমাগমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। আশপাশের এলাকাতেও নেতাকর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উদ্যানের ভেতর ও বাইরের নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থানে ছিলেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সমাবেশের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী আসন্ন নির্বাচনের প্রাক-মাঠপর্যায়ের রাজনীতিতে নিজেদের সক্রিয়তা ও অবস্থান দৃঢ়ভাবে তুলে ধরতে চেয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত সরকারপক্ষ বা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।