জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন সংক্রান্ত আবেদনগুলো এখন থেকে আর ঢালাওভাবে নিষ্পত্তি করা হবে না, জানিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আবেদনগুলো তিনটি আলাদা ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করে নিষ্পত্তি করা হবে। এসব ক্যাটাগরি হলো: প্রবাসী, সরকারি চাকরিজীবী এবং সাধারণ নাগরিক।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঢালাওভাবে আবেদনের নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া অনেক সময় দীর্ঘ হয়ে যায়, যা প্রার্থীদের জন্য অস্বস্তিকর। তবে, নতুন প্রক্রিয়া অনুযায়ী, প্রবাসী এবং সরকারি চাকরিজীবীদের আবেদনগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে। প্রবাসীরা সাধারণত বৈধ কাগজপত্র এবং পাসপোর্টের মাধ্যমে আবেদন প্রমাণ করতে পারেন, যা যাচাই করতে কম সময় লাগে। সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য, তাদের সার্ভিস বুকের মাধ্যমে আবেদনগুলো সহজেই যাচাই করা সম্ভব হবে। তবে সাধারণ নাগরিকদের আবেদনগুলো যাচাইয়ে কিছুটা সময় লাগতে পারে, কারণ অনেক ক্ষেত্রে এসব আবেদন সংশোধনের জন্য নানা ধরনের অসঙ্গতি থাকতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর বলেন, “এখন থেকে তিনটি ছকে আবেদনগুলো পৃথক করা হবে। একটি ছক প্রবাসীদের জন্য, আরেকটি সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য এবং তৃতীয়টি সাধারণ নাগরিকদের জন্য।”
ইসি ইতোমধ্যে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের নতুন এই পদ্ধতি বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছে।
এছাড়া, নির্বাচন কমিশনের সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট তিন লাখ ৭৮ হাজার এনআইডি সংশোধন আবেদন অনিষ্পন্ন ছিল। এর মধ্যে গত তিন মাসে ক্রাশ প্রোগ্রাম চালিয়ে ৯৮ হাজার ৪৪টি আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত জমা পড়েছে তিন লাখ দুই হাজার ২৬৬টি আবেদন, যার মধ্যে এক লাখ ৭৯ হাজার ৯২৬টি আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বর্তমানে প্রায় চার লাখ দুটি আবেদন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আগামী জুনের মধ্যে সকল অনিষ্পন্ন আবেদন নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, বর্তমানে দেশে মোট ভোটার রয়েছে প্রায় ১২ কোটি ৪৪ লাখ। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই সংখ্যা থেকে অনেকের জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল থাকায় প্রতিদিন নতুন নতুন আবেদন জমা পড়ছে।
এনআইডি সংশোধনের এই নতুন পদ্ধতি চালু হলে সাধারণ জনগণের জন্য তা সময়সাশ্রয়ী হবে এবং প্রমাণিত তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনের নিষ্পত্তি আরও দ্রুততার সাথে সম্ভব হবে, এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।