জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গণহত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে সোচ্চার হয়েছে। তবে তারা নির্বাহী আদেশে দলটি নিষিদ্ধ করার পরিবর্তে বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিষিদ্ধকরণের পক্ষে। বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগে, আপাতত আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানিয়েছে এনসিপি, এবং এই দাবিতে তারা ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করবে।
এনসিপি নেতারা আরও দাবি করেছেন যে, বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো যেন রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে না পারে। পাশাপাশি, তারা দলটির পুনর্বাসন বা পুনঃপ্রতিষ্ঠার যেকোনো চেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
এনসিপি’র শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মতে, আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় এনে নিষিদ্ধ করতে হলে সময়ের প্রয়োজন হবে, তবে নিবন্ধন বাতিল করা হলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে তারা কোনো দলের প্রতীকে অংশ নিতে পারবে না। এনসিপি মনে করে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ সময় নিতে পারে, তাই তারা চায় নিবন্ধন বাতিল করা হোক। দলটির নেতারা একমত হয়েছেন যে, বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে বিতর্কের সুযোগ থাকবে না, তাই দলটির নিবন্ধন বাতিলের দাবি এখনই সমর্থনযোগ্য।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এনসিপি’র নেতারা বঙ্গবন্ধুর ভ্রান্ত রাজনীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। ২২ মার্চ পুরান ঢাকায় আয়োজিত এক ইফতার অনুষ্ঠানে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “যদি আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের কোনো পরিকল্পনা করা হয়, তবে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে।”
এদিকে, সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সম্পর্কিত বিতর্ক নিয়ে এনসিপি নেতারা সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন। দলটির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ২০ মার্চ ফেসবুকে যে পোস্ট দিয়েছিলেন, তাতে ভারতের ষড়যন্ত্র এবং সেনাবাহিনীকে নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছিলেন। তবে সেনাবাহিনী এই পোস্টের প্রতি তার অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং এনসিপি’র নেতারা বিষয়টি নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করছেন।
এনসিপি আরও জানিয়েছে, সেনাবাহিনী এবং সেনাপ্রধানকে অপব্যবহার করার চেষ্টার বিরুদ্ধে তারা কঠোর অবস্থান নেবে, তবে তারা সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত থেকে বিরত রাখতে চাইবে। এনসিপি’র শীর্ষ নেতারা দেশীয় রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ চাইছে না।
এনসিপি তাদের দাবি নিয়ে ২২ মার্চ শাহবাগে আয়োজিত এক কর্মসূচিতে জানিয়েছে, ঈদের পর আরও কর্মসূচি পালন করবে। এই কর্মসূচির মধ্যে আওয়ামী লীগের বিচার ও নিবন্ধন বাতিলের দাবিকে সামনে রেখে মাঠে নামবে এনসিপি।
এনসিপি নেতাদের মতে, তাদের আন্দোলন দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে এবং তারা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে চায়।