গাজীপুরের কাশিমপুরে স্ত্রী ও চার বছরের সন্তানকে হত্যার পর স্বামী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। রোববার (২৩ মার্চ) সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর থানাধীন গোবিন্দবাড়ি দেওয়ানপাড়া এলাকা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  

নিহতরা হলেন—মো. নাজমুল ইসলাম (২৯), তার স্ত্রী খাদিজা আক্তার (২২) ও তাদের চার বছরের মেয়ে নাদিয়া আক্তার। নিহত নাজমুল ইসলাম টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার শুলাপ্রতিমা গ্রামের মো. আবুর ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, নাজমুলের কোনো পেশা ছিল না এবং তিনি নেশাগ্রস্ত ছিলেন।  

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নাজমুল ইসলাম গাজীপুর মহানগরীর গোবিন্দবাড়ি এলাকায় শ্বশুরবাড়িতেই স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে বসবাস করতেন। দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ ও নানা বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। প্রায়ই ঝগড়া হতো বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।  

ঘটনার দিন শনিবার (২২ মার্চ) রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে নাজমুল, তার স্ত্রী ও সন্তান নিজ ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়েন। পরদিন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পরিবারের সদস্যরা তাদের ঘুম থেকে না ওঠায় ডাকাডাকি শুরু করেন। কোনো সাড়া না পেয়ে তারা ঘরের পেছনের জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখেন নাজমুলের মরদেহ গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছে। পরে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে তারা খাদিজা ও নাদিয়ার নিথর দেহ বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন।  

ঘটনাস্থলে গিয়ে গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের কাশিমপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইফতেখার হোসেন জানান, সকাল ১০টার দিকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে নাজমুল স্ত্রী ও সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এছাড়া, আত্মহত্যার আগে তিনি হারপিক পান করে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।  

কাশিমপুর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাটি পারিবারিক কলহের ফলাফল বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।’  

এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে শোক ও হতবাকের আবহ তৈরি হয়েছে। পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত অব্যাহত রেখেছে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।