অনিদ্রা বা নিদ্রাহীনতা এমন একটি সমস্যা, যা অনেকেই জীবনের কোনো না কোনো সময় মুখোমুখি হন। কখনো কখনো এটি গুরুতর আকারে আবির্ভূত হয় এবং মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যদি ঘুম না আসে, তাহলে কিছু সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করলে ঘুমের সমস্যা সমাধান হতে পারে।
সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফেইথ অর্চার্ড বলেছেন, "ঘুম না আসার পেছনে সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো মস্তিষ্কের উদ্বেগ বা দুশ্চিন্তা। যদি এমন হয়, তাহলে আমি একটি বই নিয়ে পড়া শুরু করি, যতক্ষণ না পর্যন্ত আমি একটু হালকা অনুভব করি।"
ড. অর্চার্ড আরও বলেন, "ঘুম না আসার সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণগুলো হলো, মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যাওয়া এবং তার পর আর ঘুম না আসা। এরকম হলে একটানা কয়েকদিন ঘুমের সমস্যা অনুভূত হতে পারে।"
লন্ডনের রয়াল ব্রম্পটন হাসপাতালের স্লিপ মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ ড. অ্যালি হায়ার বলেন, "আমার ঘুমের সমস্যা তখনই শুরু হয়, যখন আমার স্বামী বিছানায় নাক ডাকে অথবা বারবার পাশ ফিরেন। তাই আমি 'স্লিপ ডিভোর্স' পদ্ধতি বেছে নিয়ে অন্য ঘরে ঘুমানোর চেষ্টা করি।"
ড. হায়ারের মতে, ঘুমের সমস্যা সপ্তাহে তিন রাতের বেশি হলে এবং তা তিন মাস বা তার বেশি সময় ধরে চলতে থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্লিপ মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক কলিন ইসপি বলেন, "যদি ঘুম না আসে, তাহলে বিছানা ছেড়ে উঠে অন্য জায়গায় গিয়ে শুয়ে পড়া উচিত। এটি এক ধরনের 'রিবুট সিস্টেম' হিসেবে কাজ করে।"
অধ্যাপক ইসপি আরও বলেন, "ঘুমের ওপর আমাদের মস্তিষ্কের বিশ্রামের প্রয়োজন অনেক বেশি, কারণ এটি আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘুমের সমস্যা দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে এবং এটি দিনের কাজের ওপর প্রভাব ফেললে, তখনই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।