ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বহুল আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আদালত বড় ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালত আজ বুধবার তার নামে ১০০ বিঘা জমি, পাঁচটি ভবন এবং দুইটি ফ্ল্যাট ক্রোক করার নির্দেশ দিয়েছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের আবেদনে বিচারক মো. জাকির হোসেন এই নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে, হারুন অর রশিদের নামে বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি হিসাবও অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত, যেখানে তার জমা রয়েছে ১ কোটি ২৬ লাখ ৯০ হাজার ৪৬৮ টাকা।
দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, হারুন অর রশিদের নামে ঢাকার উত্তরায় ৭ দশমিক ৪৫ কাঠা জমিতে ৩ কোটি টাকার মূল্যের একটি ইমারত রয়েছে। এছাড়া গুলশানে ১০ দশমিক ৩৬ শতক জমিতে ৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকার আরেকটি ইমারত রয়েছে। কুড়িলে সেমিপাকা একটি টিনশেড বাড়ি, খিলক্ষেতে ১ তালা একটি দালান ও সেমিপাকা আরেকটি টিনের বাড়ি রয়েছে। এসব ভবন জব্দ করার আবেদন করা হয়েছে।
এছাড়া হারুনের নামে উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে সাততলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় একটি ফ্ল্যাট এবং জোয়ার সাহারায় ছয়তলা ভবনের ৬ তলায় আরেকটি ফ্ল্যাট রয়েছে। আদালত এই দুটি ফ্ল্যাটসহ আশিয়ান সিটিতে হারুনের নামে পাঁচ কাঠার একটি প্লট জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত একই সঙ্গে কিশোরগঞ্জ, কক্সবাজার ও নারায়ণগঞ্জে হারুন অর রশিদের নামে ৯৯ দশমিক ১৮ বিঘা জমি ক্রোক করার নির্দেশ দিয়েছেন। এর মধ্যে শুধু কিশোরগঞ্জে হারুনের নামে ৯১ দশমিক ৩২ বিঘা জমি রয়েছে।
এ বিষয়ে দুদকের আবেদনে আরো বলা হয়েছে, হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান ও তদন্তাধীন রয়েছে। তিনি যেকোনো সময় এসব স্থাবর সম্পদ বিক্রি বা স্থানান্তর করতে পারেন বলে দুদক বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছে। এমতাবস্থায় এসব স্থাবর সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া প্রয়োজন।
এদিকে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে হারুন অর রশিদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এর আগে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ঢাকার আদালত।