রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে বুধবার (১৬ জুলাই) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইট থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতীক ‘নৌকা’ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সকাল থেকে ইসির ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা যায়, নিবন্ধন স্থগিত হওয়া আওয়ামী লীগের নাম থাকলেও, তার পাশে প্রতীক হিসেবে আর নৌকা নেই।
এ ঘটনার পরপরই রাজনৈতিক মহলে জোর আলোচনা শুরু হয়। বিশেষ করে সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি ঘিরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে প্রশ্ন তোলেন—“কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকাকে কেন আবার শিডিউলভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে?”
এই পোস্টের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে ‘নৌকা’ প্রতীকটি সরিয়ে নেওয়া হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি দলটির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলমান থাকার প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধনও স্থগিত করা হয়।
নিবন্ধন স্থগিতের পর দলটির কোনো কার্যক্রমই আইনগতভাবে বৈধ নয় বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ অবস্থায় কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে প্রতীক অপসারণকে যুক্তিসঙ্গত এবং প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
তবে এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে এ ধরনের সিদ্ধান্তের সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে।
নির্বাচন কমিশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, "যেহেতু দলটির নিবন্ধন স্থগিত, সেহেতু নির্বাচন কমিশনের তালিকায় তাদের প্রতীকও থাকছে না—এটাই স্বাভাবিক প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত।"
এদিকে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি জারির প্রক্রিয়া চলছে।