অন্যান্য খবর টিপস এন্ড ট্রিকস

জাল নোট চেনার সহজ উপায় !

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ২০-৩-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৫১

জাল নোটের কারবারিদের চক্রে পড়ে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়তই বিপাকে পড়ছেন। বিশেষ করে উৎসবের মৌসুমে এই চক্রটি আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। হাটবাজার থেকে শুরু করে শপিং মল পর্যন্ত জাল নোট ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা প্রায়শই গণমাধ্যমে আসে। সাধারণত ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বেশি জাল হয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে জাল নোট চিনবেন এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন।

নিরাপত্তা সুতা
১০০, ২০০ ও ৫০০ টাকার নোটের বাঁ পাশে ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত ৪ মিলিমিটার চওড়া নিরাপত্তা সুতা থাকে। ১০০০ টাকার নোটে এই সুতার প্রস্থ ৫ মিলিমিটার। এই সুতায় রঙের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। যেমন, ১০০, ২০০ ও ৫০০ টাকার নোটের সুতা লাল থেকে সবুজ রঙে পরিবর্তিত হয়। অন্যদিকে, ১০০০ টাকার নোটের সুতা সোনালি থেকে সবুজ রঙে পরিবর্তন হয়। এছাড়া, ২০০ ও ১০০০ টাকার নোটের সুতায় নোটের মান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম ছাপানো থাকে। নোট নাড়াচাড়া করলে হলোগ্রাফিক ইমেজের চকচকে ভাব চোখে পড়ে, যা জাল নোটে দেখা যায় না।

লুকানো ছাপার অক্ষর
১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির নিচে বিভিন্ন নকশার আড়ালে নোটের মান (১০০, ৫০০, ১০০০) ছাপানো থাকে। নোটটি কাত করলে এই সংখ্যাগুলো স্পষ্টভাবে দেখা যায়। ২০০ টাকার নোটে একই স্থানে ইংরেজিতে 'TWO HUNDRED TAKA' লেখা থাকে।

সূক্ষ্ম ফন্টে লেখা
১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের পেছনের পিঠে নিচের দিকে বাঁ পাশে নোটের মানের সঙ্গে 'BANGLADESH BANK' লেখা থাকে। ২০০ টাকার নোটের বাঁ পাশের নকশার মাঝে অতি সূক্ষ্ম ফন্টে '200' লেখা থাকে। এই লেখা খালি চোখে দেখা কঠিন, তবে আতশী কাচ বা উন্নতমানের স্মার্টফোনের ক্যামেরা দিয়ে জুম করলে দেখা সম্ভব। জাল নোটে এই সূক্ষ্ম ফন্ট ফেটে যায়।

খসখসে ভাব
আসল নোটের কাগজ কিছুটা খসখসে হয়, যা হাতে নিলেই বোঝা যায়। অন্যদিকে, জাল নোট সাধারণত মসৃণ হয়। সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার সাইফুল ইসলামের মতে, স্পর্শ করেই জাল নোট শনাক্ত করা সম্ভব।

রঙের পরিবর্তন
১০০ ও ১০০০ টাকার নোটের কোণায় থাকা সংখ্যার রং সোনালি থেকে সবুজে পরিবর্তিত হয়। ৫০০ টাকার নোটে রং ম্যাজেন্টা থেকে সবুজে পরিবর্তন হয়। এছাড়া, ১০০০ টাকার নোটের পেছনে বাঁ দিকে হালকা নীলচে রঙে 'BANGLADESH BANK' লেখা থাকে, যা নোট নাড়াচাড়া করলে চোখে পড়ে।

স্পার্ক বা আলোর প্রতিফলন
২০০ টাকার নোটের ডান কোণায় সোনালি থেকে সবুজ রঙের চৌম্বকীয় কালি ব্যবহার করা হয়। নোটটি কাত করলে এটি জ্বলজ্বল করতে থাকে এবং উজ্জ্বল আলোর রেখা ওঠানামা করে।

জাল নোট প্রতিরোধে সরকারের পদক্ষেপ
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কারেন্সি ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, জাল নোটের সমস্যা বাংলাদেশে এখনো প্রকট আকার ধারণ না করলেও ঈদের মতো উৎসবের সময় জাল নোট চালানোর চেষ্টা বেড়ে যায়। বিশেষ করে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট জাল করার প্রবণতা বেশি। এই সমস্যা মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের কাছে একটি কঠোর আইনের প্রস্তাব পাঠিয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে জাল নোট অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

তবে, তারপরও মানুষের হাতে জাল নোট চলে আসার ঘটনা ঘটছে এবং প্রতিমাসেই বেশ কিছু মামলা রুজু হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন হয়ে জাল নোট চেনার উপায়গুলো জানা এবং সতর্ক থাকা জরুরি।