ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জে এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে তিন যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। এছাড়া লাশ গুমের ঘটনায় দণ্ডিতদের প্রত্যেককে আরও সাত বছর করে কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এরশাদ আলম জর্জ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন হলেন কেরানীগঞ্জের মো. সজিব (২৫), ফরিদপুরের মো. রাকিব (২৩) এবং শরীয়তপুরের শাওন ওরফে ভ্যালকা শাওন (২৬)। তবে অপর দুই আসামি আলী আকবর (২২) ও মো. রিয়াজ (২২)-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দিয়েছেন।
রায় ঘোষণার সময় কারাগারে থাকা আসামি রাকিব ও শাওনকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে তাদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত সজিব পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
২০২২ সালের ১১ জুন সকালে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পশ্চিম বামনসুর জামে মসজিদের সামনে একটি পুকুরে কিশোরীর লাশ ভেসে থাকার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং লাশ উদ্ধার করে। তদন্তে বেরিয়ে আসে, ভিকটিমকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশের তদন্তে উঠে আসে, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যার পর লাশ গুম করার চেষ্টা করেছিল। প্রথমে শাওন গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাকিব ও সজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা আদালতে একই ধরনের স্বীকারোক্তি দেন।
২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক অলক কুমার দে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর আদালত অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন। মামলার বিচার চলাকালে ১৯ জন সাক্ষ্য দেন।
সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এরশাদ আলম জর্জ জানিয়েছেন, এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছেন।