সকল খবর ভূমি বিষয়ক খবর

কুষ্টিয়ায় জমির জালিয়াতির মামলায় সাব রেজিস্ট্রার কারাগারে

অনিন্দ্যবাংলা :

প্রকাশ : ১-৩-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৪৬

কুষ্টিয়ায় সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার সিংহসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতি ও ভুয়া দলিল তৈরি করে দুই বোনের প্রায় ১০ কোটি টাকার মূল্যমানের সম্পত্তি জবরদখলের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। এই ঘটনায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালত সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার সিংহকে জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কুষ্টিয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তপন রায় বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার সিংহের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করেন এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তার বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়। সন্ধ্যার দিকে তাকে কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

সুব্রত কুমার সিংহ বর্তমানে দিনাজপুরে সাব রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত থাকলেও কুষ্টিয়ায় কর্মরত অবস্থায় তিনি এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তাদের সহায়তায় দুটি ভুয়া দলিল তৈরি করে দুই বোনের ২৮ বিঘা জমি ও পেট্রলপাম্পের জমি আত্মসাতের চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় মামলার বাদী হয়েছেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুর ইউনিয়নের বেড়বাড়াদী গ্রামের জামিলা নাহার শেখ। তার সহোদর বোন জুবাইদা নাহার শেখ অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের ১০ মার্চ ও ১৯ জুন কুষ্টিয়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ভুয়া দলিল তৈরি করে দুই বোনের পৈতৃক জমি এবং পেট্রোলপাম্পের জমি জালিয়াতি করে বিক্রির চেষ্টা করা হয়। এতে তাদের স্বাক্ষর ও টিপসই জাল করে দলিল তৈরি হয় এবং এই জমি কয়েকগুণ উচ্চ মূল্যে অন্যদের কাছে বিক্রি করা হয়।

পিবিআই তদন্তে ১১ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আসামিরা সাব রেজিস্ট্রার, অফিস সহকারী, পিয়ন, জমির দালাল এবং ভুয়া দলিল গ্রহীতাসহ বিভিন্ন ভূমিকায় ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের রবিউল আলম বলেন, “অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আমরা তদন্ত শেষ করেছি এবং আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

কুষ্টিয়া জেলা আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ জানুয়ারি হাইকোর্টের নির্দেশে সুব্রত কুমার সিংহকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করার জন্য বলা হয়েছিল। বুধবার তিনি আদালতে হাজির হলে বিচারক তার জামিন আবেদন খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এ ঘটনায় স্থানীয়রা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এমন ঘটনা প্রশাসনের প্রতি আস্থা কমাতে পারে এবং মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে তদন্ত করছে।