অন্যান্য খবর আইন-আদালত

মাগুরার শিশুর ছবি অপসারণে হাইকোর্টের নির্দেশ !

অনিন্দ্যবাংলা :

প্রকাশ : ৯-৩-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০২৯

মাগুরায় আট বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তার বোনের শ্বশুর ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে হস্তক্ষেপ করেছেন। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার (৯ মার্চ) এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আদেশ দেন।  

ঘটনাটি প্রথমে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে আদালতের নজরে আসে। ব্যারিস্টার মাহসিব হোসাইন শিশুটির স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেন। আদালত এ বিষয়ে আজই আদেশ দেবেন বলে আইনজীবী জানান।  

এদিকে, শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় এ ঘটনায় মামলা করেছেন। এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, তার মেয়ের স্বামীর সহায়তায় শিশুটির শ্বশুর তাকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনা শিশুটির শাশুড়ি ও ভাসুর জানতেন। পরে ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যার চেষ্টাও চালানো হয়।  

গত শনিবার সকালে শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় এজাহার দাখিল করেন। বেলা তিনটার দিকে মামলাটি রেকর্ড করা হয়। মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৪)-এর ক/৩০ ধারায় ধর্ষণ ও ধর্ষণের মাধ্যমে আহত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাসুরকে আসামি করা হয়েছে। তারা ইতিমধ্যে পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।  

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, চার মাস আগে মাগুরা পৌর এলাকার এক তরুণের সঙ্গে শিশুটির বড় বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শিশুটির শ্বশুর তাকে অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যরা জানতেন এবং এ নিয়ে বারবার ঝগড়া হতো। গত ১ মার্চ শিশুটি তার বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়।  

ঘটনার বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়, গত বুধবার (৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে শিশুটি তার বড় বোন ও বোনের স্বামীর সঙ্গে একই কক্ষে ঘুমায়। রাত আড়াইটার দিকে বড় বোন ঘুম থেকে জেগে দেখেন, শিশুটি মেঝেতে পড়ে আছে এবং যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়ার কথা বলছে। শিশুটি জানায়, রাতে তার বোনের স্বামী দরজা খুলে দিলে তার শ্বশুর তাকে মুখ চেপে ধরে কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন। চিৎকার করতে গেলে তার গলা চেপে ধরা হয়। পরে তাকে আবার মেঝেতে ফেলে রেখে যায়।  

পরদিন সকালে শিশুটি আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে শাশুড়ি তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে শিশুটিকে জিনে ধরেছে বলে চিকিৎসকদের জানানো হয়। তবে চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্মীরা বিষয়টি টের পেলে শাশুড়ি পালিয়ে যান। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে পৌঁছান।  

এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশিত হয়েছে। শিশুটির পরিবার ও এলাকাবাসী দ্রুত বিচার চেয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।  

হাইকোর্টের স্বতঃপ্রণোদিত হস্তক্ষেপ ও শিশুটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা এ ঘটনায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আশা জাগিয়েছে। শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা ও আইনের কঠোর প্রয়োগের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।