কক্সবাজারের মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণের অর্থ আত্মসাত ও নথি জালিয়াতির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. রুহুল আমিন, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামী ৩ আগস্ট মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
অভিযুক্ত অন্যরা হলেন—জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল, আদালতের স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদ এবং মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পিপি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাবলু জানান, মামলার অভিযোগে বলা হয়, মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ভূমি অধিগ্রহণে প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা এ কে এম কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর কক্সবাজার আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় তৎকালীন ডিসি রুহুল আমিনসহ ২৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে দুদককে তদন্তের নির্দেশ দেয়। কিন্তু তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার অভিযোগপত্র থেকে প্রধান আসামি রুহুল আমিনের নাম বাদ দিয়ে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠান।
ঘটনাটি জানার পর বাদী ২০২1 সালে ওই আদালতেই একটি পৃথক জালিয়াতি মামলা দায়ের করেন। এতে জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন, জেলা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়।
দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন মামলাটি তদন্ত শেষে চলতি বছরের ১ জুলাই পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
এ বছরের ২৩ জানুয়ারি আদালত তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে তাঁরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে অর্ন্তবর্তীকালীন জামিন নেন।
মামলার গুরুত্ব বিবেচনায় সম্প্রতি এটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, নথিপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য গোপন করে ভূমি অধিগ্রহণের অর্থ আত্মসাতে সহযোগিতা করেন অভিযুক্ত কর্মকর্তারা।
এই মামলার রায় ও বিচারিক কার্যক্রম ঘিরে এখন কক্সবাজারের প্রশাসন ও বিচার বিভাগে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।