দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ৩৮তম থেকে ৪৩তম বিসিএসসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সনদ ব্যবহার করে চাকরি নেওয়ার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে। সোমবার (৭ এপ্রিল) দুদকের একটি বিশেষ টিম ঢাকা কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে এই তথ্য সংগ্রহ করেছে।
দুদক জানায়, ৩৮তম বিসিএস থেকে ৪৩তম বিসিএসসহ অন্যান্য সরকারি দপ্তরে মুক্তিযোদ্ধা সনদ ব্যবহার করে চাকরি নেওয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে সরকারি কর্ম কমিশন থেকে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা সংগ্রহ করে এবং নবম বিসিএস থেকে বর্তমান পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা সনদ ব্যবহার করে চাকরি পাওয়া ব্যক্তিদের তথ্য যাচাই করার জন্য সঠিকতা পর্যালোচনা করা হয়।
এনফোর্সমেন্ট টিমের প্রাথমিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, বেশ কয়েকজন চাকরি প্রার্থী ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ব্যবহার করে সরকারি চাকরি পেয়েছেন। এই ব্যাপারে দুদক টিম কমিশনকে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে জানানো হয়।
এদিকে, সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান জনপ্রশাসনে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি করা ৮৯ হাজার ২৩৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে বেশিরভাগই নিয়োগ পেয়েছেন আওয়ামী লীগ শাসনামলে। তাদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সনদ ব্যবহার করে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কর্মরত মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পাওয়া ৮৯ হাজার ২৩৫ জন কর্মকর্তার তালিকা জমা পড়েছে। তবে, তাদের মধ্যে অনেকের মুক্তিযোদ্ধার সনদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিশেষত, সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংক এবং পুলিশ বাহিনীতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নেওয়ার সংখ্যা বেশী। এসব চাকরিজীবীর অনেকের বিরুদ্ধে জাল-জালিয়াতির অভিযোগও রয়েছে।
গত ১৫ বছরে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকরি পাওয়া ব্যক্তির মধ্যে ২৯ হাজার ৪৮৫ জন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এবং ২৩ হাজার ৬৩ জন পুলিশ বাহিনীতে চাকরি পেয়েছেন।
এ ঘটনায় একাধিক উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে, যাতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভুয়া সনদ ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়।