নিজস্ব প্রতিবেদক
আমরা জীবনের কোনো না কোনো সময়ে অসম্মান বা অপমানজনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হই। অনেক সময় কাছের মানুষদের কাছ থেকেই নেতিবাচক মন্তব্য শুনতে হয়, যা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করতে পারে। তবে এ ধরনের পরিস্থিতি দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করা গেলে মানসিক শান্তি বজায় রাখা সম্ভব। চলুন, দেখে নেওয়া যাক কীভাবে অপমানজনক মন্তব্যের মুখে আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা যায়।
শান্ত ও সংযত থাকুন
কেউ যদি আপনার প্রতি নেতিবাচক মন্তব্য করেন, তৎক্ষণাৎ প্রতিক্রিয়া দেখানোর দরকার নেই। রাগ বা হতাশা প্রকাশ করলে মন্তব্যকারী আরও বেশি নেতিবাচক আচরণ করতে পারেন। তাই প্রথমেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করুন। প্রতিক্রিয়া জানানোর আগে গভীর শ্বাস নিন ও পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিন।
মন্তব্যকারীকে পুনর্বিবেচনার সুযোগ দিন
যদি কেউ অসম্মানজনক কিছু বলেন, তাকে বলুন, ‘আপনার কথা কী আমি ঠিক বুঝেছি? দয়া করে আবার বলবেন?’ এতে মন্তব্যকারী নিজেই ভেবে দেখবেন, তিনি ঠিক কিছু বলেছেন কিনা। এতে অনেক সময় অপমানজনক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে পারেন।
নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন
অন্যের কথায় নিজেকে মূল্যায়ন করা ঠিক নয়। কেউ যদি আপনাকে অবজ্ঞা করেন, সেটা তার চিন্তাভাবনার প্রতিফলন, আপনার যোগ্যতার নয়। তাই নিজের শক্তির ওপর আস্থা রাখুন এবং ইতিবাচক মানুষদের সংস্পর্শে থাকার চেষ্টা করুন।
যথাযথভাবে জবাব দিন
কিছু পরিস্থিতিতে অপমানজনক কথার পাল্টা উত্তর দেওয়াই সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে। তবে উত্তরের ধরন হতে হবে শান্ত ও দৃঢ়। আপনি বলতে পারেন, ‘আপনার মন্তব্যটা আমার জন্য সম্মানজনক মনে হয়নি।’ এতে পরিস্থিতি আর ঘোলাটে হবে না, বরং আলোচনা শ্রদ্ধাশীল থাকবে।
উদ্দেশ্য পরিষ্কার করতে বলুন
কেউ যদি বারবার অপমান করেন, তাকে সরাসরি প্রশ্ন করুন, ‘আপনি কি ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে অপমান করার চেষ্টা করছেন?’ এতে তার মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হতে পারে এবং নিজের মন্তব্য নিয়ে পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হতে পারেন।
সম্পর্কের গুরুত্ব পর্যালোচনা করুন
যে ব্যক্তি বারবার আপনাকে অসম্মান করছেন, তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ভাবুন। যদি এটি এক-আধবার ঘটে, তাহলে বুঝিয়ে বলা যেতে পারে। তবে যদি এটি নিয়মিত ঘটে, তাহলে তার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখা বা যোগাযোগ সীমিত করাই ভালো।
সীমা নির্ধারণ করুন
যদি কেউ একাধিকবার অপমান করেন, তবে তাকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিন, ‘আপনার আচরণ আমার ভালো লাগছে না।’ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানিয়ে দিন যে আপনি সম্মানজনক আচরণ আশা করেন এবং এর থেকে কম কিছু মেনে নেবেন না।
অপমানজনক মন্তব্য বা আচরণের মুখোমুখি হলে সংযম ও আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। অন্যের কথায় প্রভাবিত না হয়ে নিজের মূল্যবোধ ও আত্মসম্মান বজায় রাখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।