সকল খবর দেশের খবর

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩২ হাজার শূন্য পদ দ্রুত পূরণের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ১৫-৭-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৩৫

দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ দ্রুত পূরণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়াসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বৈঠকে দেশের প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, এবং ব্যবস্থাপনার গতিপ্রকৃতি নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় জানান, "প্রাথমিক শিক্ষায় অবকাঠামো খাতে প্রচুর ব্যয় হলেও কাঙ্ক্ষিত মানোন্নয়ন হয়নি। আমরা এখন স্কুলভিত্তিক র‍্যাংকিং চালু করছি এবং যেসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে আছে সেগুলোর জন্য বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে।"

তিনি আরও জানান, দেশের প্রায় ৩২ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে, যা শিক্ষার গুণগত মানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। মূল্যায়নে দেখা গেছে, যেখানে প্রধান শিক্ষক দায়িত্বশীল ও যোগ্য, সেখানে শিক্ষার মান তুলনামূলকভাবে ভালো।

এ প্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা দেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রধান শিক্ষক পদে পদায়ন এবং নতুন নিয়োগের জন্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। তিনি বলেন, “যোগ্য, অভিজ্ঞ এবং মেধাবী ব্যক্তিদের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞদের পাশাপাশি তরুণ, উদ্যমী শিক্ষকদেরও সুযোগ দিতে হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়াটি হতে হবে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু।”

এ লক্ষ্যে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি শিক্ষকদের বদলির ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশও দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “তদবির নির্ভর বদলির সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ছাড়া বদলি নয়।”

নারীবান্ধব শিক্ষা পরিবেশ তৈরির ওপরও গুরুত্বারোপ করেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস। তিনি বলেন, “স্কুলের ভবন নির্মাণ ও নকশায় নারীবান্ধব দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে হবে। এ জন্য কমিটিতে নারী স্থপতিদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।”

বৈঠকে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টারনেট সংযোগ এবং ধাপে ধাপে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ চালুর বিষয়েও গুরুত্বারোপ করা হয়।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মানোন্নয়ন ও প্রশাসনিক কাঠামো শক্তিশালী করতে প্রধান উপদেষ্টার এই উদ্যোগকে শিক্ষা খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।