আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে পবিত্র রমজান। রোজার আগেই বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। বিশেষ করে লেবু, বেগুন, শসা, বিভিন্ন ফল ও মাংসের দাম বেড়েছে আকাশচুম্বী। এর মধ্যে ভোজ্য তেলের সংকটও প্রকট হয়ে উঠেছে। সয়াবিন তেল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না, এবং তার দামও বেড়েছে। গতকাল (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর খিলক্ষেত, জোয়ারসাহারা ও মহাখালী বাজারে গিয়ে এই অবস্থা প্রতিফলিত হয়েছে।
বাজারগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, রমজান উপলক্ষে ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড়। নিত্যপণ্যের দোকানগুলোতে ক্রেতারা সস্তা দামে পণ্য কেনার জন্য চেষ্টা করছেন। গরু ও মুরগির মাংসের দোকানগুলোর সামনেও জমে উঠেছে ভিড়। এসব দোকানগুলোতে ক্রেতাদের মধ্যে দরদামও চলছে।
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় থাকা বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে অনেকটাই। এক হালি লেবু এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা পর্যন্ত, যা মাত্র ১০ দিন আগে ছিল ৪০ টাকা। শসার দামও বেড়েছে। বর্তমানে শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, যা আগে ছিল ৫০ টাকা। বেগুনের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে; লম্বা বেগুন ৭০ টাকা এবং গোল বেগুন ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
পাশাপাশি, মাংসের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। সোনালি কক মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দামও ২১০ টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা আগে ছিল ২০০ টাকা। গরু ও খাসি মাংসের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। গরুর মাংস ৭৮০ টাকা, খাসির মাংস ১২০০-১৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, ভোজ্য তেলের সংকট আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। কয়েক মাস ধরে চলা সংকট এখনো কাটেনি, এবং বাজারে সয়াবিন তেল ১ লিটার বা ২ লিটারের বোতল পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি ৫ লিটারের বোতলও বাজারে পাওয়া গেলেও, ছোট বোতলের জন্য ক্রেতাদের অনেক অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তেল বিক্রেতারা বাজারে তেল লুকিয়ে রাখছেন এবং পরে বেশি দামে তা বিক্রি করছেন।
ফলমূলের দামও বেড়েছে। আপেল ২৬০-৪০০ টাকা কেজি, মাল্টা ২৮০-৩২০ টাকা কেজি এবং তরমুজের দাম সাইজ অনুযায়ী ৪৫০-৫৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য সবজির মধ্যে শিমের দাম ৪০-৫০ টাকা কেজি, ফুলকপি ৪০-৫০ টাকা পিস, বাঁধাকপি ৩০-৪০ টাকা পিস, লাউ ৫০-৬০ টাকা পিস, টম্যাটো ৩০-৪০ টাকা কেজি, গাজর ৩০-৪০ টাকা কেজি, মুলা ২০ টাকা পিস এবং মটরশুঁটি ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া, ডিমের দামও বেড়েছে। এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায় এবং দেশি মুরগির ডিমের দাম ৯০ টাকার হালি।
বাজারের এই অস্থিরতা নিয়ে ক্রেতারা চিন্তিত। বিশেষত রোজার আগের এই দামবৃদ্ধি তাদের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার এবং বাজার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে দাবি উঠেছে, যাতে দ্রব্যমূল্যের অস্থিরতা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।