বুলডোজার দিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বর্তমান সচিব ও সাতক্ষীরার সাবেক জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসানসহ ২৫ জন পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলাটি সাতক্ষীরার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করেন বাদী মো. ওবায়দুল্যাহ। তিনি বৈচনা গ্রামের মো. মাদার সরদারের ছেলে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার ওসিকে তদন্ত সাপেক্ষে মামলা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— তৎকালীন সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইনামুল হক, পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, আবুল হাসেম, হায়াৎ মাহমুদ, শরীফ মিয়াজী, হেকমত আলীসহ ১৫ পুলিশ সদস্য এবং ভোমরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজী আব্দুল গফুর, সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলামসহ ১০ জন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি বৈচনা গ্রামের ওবায়দুল্যাহর বাড়িতে এই হামলা চালানো হয়। বুলডোজার দিয়ে বাড়িটি ধ্বংস করা হয় এবং ব্যাপক লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। দীর্ঘ সময় রাজনৈতিক কারণে মামলা দায়ের করা সম্ভব হয়নি। এবার কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ ও উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে মামলা করা হয়েছে।
বাদী ওবায়দুল্যাহ অভিযোগ করেন, ওই সময়কার সরকার পতিত ফ্যাসিস্ট বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন নাজমুল আহসান, যিনি বর্তমানে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে কর্মরত। তিনি আরো বলেন, নাজমুল আহসানের সময় সাতক্ষীরা জেলায় রাজনৈতিক সহিংসতায় ৪৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের স্থানীয় নেতাকর্মী ছিলেন।
ওবায়দুল্যাহ বলেন, “শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পর পরই তৎকালীন পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। অথচ আজও অনেক দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
এই মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় স্থানীয় রাজনৈতিক মহল ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো সমর্থন প্রকাশ করেছে।