সকল খবর দেশের খবর

সহিংসতার ৬ মাস: ধর্ষণ ৪৮১, মৃত্যু ৩২০

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ২-৭-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০০৩

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে ৭৩৬ জন কন্যাশিশুসহ মোট ১,৫৫৫ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদের পর্যবেক্ষণে তৈরি এই তথ্যচিত্রে উঠে এসেছে নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতার উদ্বেগজনক চিত্র।

১ জুলাই মহিলা পরিষদ গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে জানায়, ধর্ষণ, হত্যা, যৌন নিপীড়ন, বাল্যবিবাহ, অপহরণসহ নানা ধরনের সহিংসতা মোকাবিলা করছে দেশের নারী ও শিশুরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম ছয় মাসে ৪৮১ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, যার মধ্যে ৩৪৫ জনই শিশু। দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১০৬ জন, এর মধ্যে ৬২ জন শিশু। আরও মর্মান্তিক তথ্য হলো, ধর্ষণের পর ১৭ জন নারী ও শিশুকে হত্যা করা হয়েছে।

এই সময়কালে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন ৫১ জন নারী, যার মধ্যে ৩৫ জন শিশু। উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছেন ৩৪ জন নারী, যাদের মধ্যে ২৫ জন শিশু। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ৩২০ জন নারী ও শিশু; এর মধ্যে ৬১ জন শিশু।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, কেবল জুন মাসেই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৮৭ জন কন্যাশিশু এবং ১১৬ জন নারী—মোট ২০৩ জন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৬৫ জন নারী, যার মধ্যে ৪৩ জনই শিশু। ৮ জন নারী এবং ৫ জন শিশু দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৩ জন নারী ও শিশু এবং ৭ জন শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।

জুন মাসে উত্ত্যক্তের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ২ জন নারী। পারিবারিক সহিংসতা, দাম্পত্য কলহ ও অন্যান্য কারণে ১৩ জন শিশুসহ মোট ৬৮ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা রয়েছে আরও ১৩টি—যার মধ্যে ২ জন শিশু ও ১১ জন নারী।

এছাড়া এসিডদগ্ধ হয়েছেন ১ জন নারী এবং আগুনে দগ্ধ হয়েছেন ৩ জন নারী, যাদের মধ্যে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১ জন নারী এবং পারিবারিক সহিংসতায় শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন আরও ৬ জন। আত্মহত্যা করেছেন ৬ জন শিশুসহ মোট ২২ জন নারী।

জুন মাসে ২টি বাল্যবিবাহের ঘটনা, ২টি শিশু অপহরণ এবং ১টি সাইবার সহিংসতার অভিযোগও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।

প্রসঙ্গত, মহিলা পরিষদ প্রতিমাসে ১৫টি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করে থাকে। সংস্থাটি নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সমাজের সম্মিলিত দায়িত্ব পালনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।