অন্যান্য খবর টিপস এন্ড ট্রিকস

শিশুকে মোবাইল আসক্তি থেকে বাঁচানোর সহজ উপায়

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ২২-৪-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০১৯

আজকের শহুরে ব্যস্ত জীবনে শিশুদের শৈশব যেন হারিয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল পর্দার আড়ালে। খেলাধুলার উচ্ছ্বাস, প্রকৃতির নিবিড় বন্ধুত্ব কিংবা কল্পনার রঙিন জগৎ এসব এখন অধিকাংশ শিশুর কাছেই কেবল গল্প হয়ে উঠছে। অথচ শিশু মানেই তো কৌতূহল, সৃজনশীলতা আর প্রাণবন্ত এক মনের প্রতিচ্ছবি। তাই প্রয়োজন, শিশুদের জন্য একটি প্রাণবন্ত, আনন্দময় শৈশবের পরিবেশ তৈরি করা। বকাঝকা নয়, বরং শিশুকে দিন আবিষ্কারের আনন্দ।

রঙের জগতে এক শিশুসুলভ ডুব
রং শিশুদের সবচেয়ে প্রিয় এক উপকরণ। একটা ইজেল আর কিছু জলরঙ থাকলেই সে আঁকতে পারে কল্পনার অসীম ক্যানভাস। আঙুলে রং মেখে, কাগজে ছাপ দিয়ে কিংবা দেয়ালে আঁকিবুঁকি করেও প্রকাশ করতে পারে সে তার ভেতরের অনুভব। রঙ নিয়ে খেলার মধ্য দিয়ে শিশু রঙের মিশ্রণ, ছায়া-আলো আর সৌন্দর্যের ধারণাও শিখে ফেলে একেবারেই মজার ছলে।

পুরোনো কাগজ-কাটুনির নতুন গল্প

ঘরের পুরোনো কাগজ, কার্টন বা রঙিন কাগজ দিয়েই শিশু বানাতে পারে নানা কিছু—চাঁদ, তারা, ফুল, পাখি, নৌকা, উড়োজাহাজ কিংবা নিজের কল্পনার কোনো চরিত্র। ওরিগামি বা কাগজ ভাঁজ করে নতুন আকৃতি তৈরির খেলা তার হাতে এনে দেবে তৈরি করার আনন্দ। চাইলে সে তার বানানো জিনিস বন্ধুদের উপহারও দিতে পারে।

মাটির ছোঁয়ায় গড়া ছোট্ট শিল্পী
নগরের বাচ্চারা মাটির গন্ধ চেনে না বললেই চলে। তবে নার্সারি থেকে আনা একটু মাটি আর কিছু রঙ দিয়ে শিশু নিজেই গড়তে পারে ছোটখাটো শিল্পকর্ম। এছাড়াও বাজারে পাওয়া যায় বিভিন্ন রঙের প্লে-ডো, যা দিয়ে বানানো যায় প্রাণী, খাবার বা নিজের কল্পনার জগৎ।

কল্পনার জগতে ভ্রমণ
শিশুকে অনুপ্রাণিত করুন গল্প বলতে, কিংবা অভিনয় করে ফুটিয়ে তুলতে তার প্রিয় চরিত্রদের। এতে তার ভাষাজ্ঞান যেমন বাড়বে, তেমনি বাড়বে আত্মবিশ্বাস ও কল্পনাশক্তিও। চাইলে বিজ্ঞানের ছোট্ট ছোট্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করা যায় ঘরে বসে, যা শিশুদের শেখাবে বিশ্লেষণী চিন্তা।

প্রকৃতির সঙ্গে বন্ধুত্ব
শিশুকে পার্কে বা খোলা জায়গায় নিয়ে গিয়ে ফুলপাতা কুড়াতে উৎসাহ দিন। সে চাইলে পাতা রঙে ডুবিয়ে খাতায় ছাপ দিতে পারে একটা হবে পাতার ছাপ, আরেকটি তার মিরর ইমেজ। বাড়িতে জায়গা থাকলে ছোট গাছ লাগান শিশুর সঙ্গে। আর যদি সম্ভব হয়, প্রাণীর সঙ্গে বন্ধুত্ব করিয়ে দিন। এতে শিশু শিখবে যত্ন আর সহানুভূতি।

ডিজিটাল থেকে মুক্তির প্রথম ধাপ নিজেদের আচরণ
শিশুরা যা দেখে, তাই শেখে। তাই বড়দের উচিত প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল বা ট্যাব ব্যবহার না করা শিশুর সামনে। শিশুর মনোযোগ পেতে চাইলে আপনাকেও থাকতে হবে তার সঙ্গে, তার চোখে চোখ রেখে গল্প বলতে হবে, হাতে ধরে গাছ লাগাতে হবে, একসঙ্গে কাগজ কেটে নৌকা বানাতে হবে।

শিশুদের শৈশব ফিরিয়ে আনতে চাইলে প্রয়োজন তাদের ভাবনার জগতে সঙ্গী হওয়া। একটু ধৈর্য, কিছু উপকরণ আর খোলামেলা সময় এই তিনেই তৈরি হতে পারে এক অনন্য শৈশবের গল্প, যেখানে থাকছে প্রকৃতি, সৃষ্টিশীলতা আর নিখাদ আনন্দ।