সকল খবর দেশের খবর

সমুদ্রই হবে বিশ্বের পথে বাংলাদেশের মহাসড়ক: ড. ইউনূস

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ৩-৯-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৫৬

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শুধু একটি গভীর সমুদ্র বন্দর গড়ে তোলা যথেষ্ট নয়—বাংলাদেশকে সামুদ্রিক অর্থনীতি বা ‘ব্লু ইকোনমি’ গড়ে তোলার ভিশন নিয়ে এগোতে হবে। তিনি বলেন, “ওই এলাকা শুধু একটি ফ্যাসিলিটেটিং জোন হিসেবে না, বরং সেখানে একটি নতুন শহরের জন্ম হবে। সেখান থেকেই আমাদের আন্তর্জাতিক কানেক্টিভিটি তৈরি হবে। সমুদ্রই হবে বিশ্বের পথে আমাদের মহাসড়ক।”

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নবগঠিত ‘মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (মিডা)’-এর সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন মিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুণ।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মিডার সদস্য কমোডর তানজিম ফারুক, মো. সারোয়ার আলম, প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. সাইফুল্লাহ পান্না।

বৈঠকে মহেশখালী-মাতারবাড়ী উন্নয়ন প্রকল্পের একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন মিডা চেয়ারম্যান। তিনি জানান, প্রকল্পটি তিনটি ধাপে বাস্তবায়ন হবে। প্রথম ধাপ ২০২৫ থেকে ২০৩০, দ্বিতীয় ধাপ ২০৩০ থেকে ২০৪৫ এবং তৃতীয় ধাপ ২০৪৫ থেকে ২০৫৫ পর্যন্ত। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রায় ২৫ লাখ মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান হবে এবং দেশের জিডিপিতে প্রায় ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যুক্ত হবে।

গভীর সমুদ্র নিয়ে গবেষণার গুরুত্ব তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, “আমরা কখনোই সমুদ্রজগতে প্রবেশ করিনি, এ নিয়ে চিন্তাও করিনি। এ বিষয়ে গবেষণা নেই, ফাইন্ডিংস নেই। এখন সময় এসেছে এই খাতে গবেষণা চালানোর এবং নিজস্ব সক্ষমতা গড়ে তোলার।” তিনি বলেন, “বিদেশি গবেষণা যেগুলো আমাদের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক, সেগুলো অনুসন্ধান করতে হবে এবং সমান্তরালে নিজস্ব গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা মহেশখালী অঞ্চলে আন্তর্জাতিক মানের একটি ট্রেইনিং ফ্যাসিলিটি গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ওশান ইকোনমি নিয়ে আন্তর্জাতিক কনফারেন্স আয়োজন করতে হবে, যাতে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করা যায়।

এ সময় তিনি পরিবেশ রক্ষার দিকেও গুরুত্ব দেন। মহেশখালীর বনভূমি রক্ষায় একটি পরিকল্পনা গ্রহণের ওপর জোর দেন তিনি। বলেন, “সেখানকার বনভূমি এখন কী অবস্থায় আছে এবং ভবিষ্যতে আমরা সেটিকে কোন অবস্থায় দেখতে চাই—সেই রূপরেখা এখন থেকেই নির্ধারণ করতে হবে।”

বৈঠকে পরিবেশবান্ধব পর্যটনকে (ইকো-ট্যুরিজম) উৎসাহিত করতে একটি ইকো-ট্যুরিজম পার্ক গড়ে তোলার বিষয়েও আলোচনা হয়।