অন্যান্য খবর রাজনীতি

সংবিধান সংস্কার জরুরি: ড. আলী রীয়াজ !

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ২০-৩-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৭৭

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, ১৯৭২ সালের সংবিধানকে একটি রাজনৈতিক দলের আদর্শ হিসেবে বিবেচনা করা যায়। তিনি বলেন, এই সংবিধানে সাধারণ মানুষের মুক্তি আসেনি, তাই সংবিধান সংস্কার করা অত্যন্ত জরুরি। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে 'রাষ্ট্র সংস্কার, রাজনৈতিক ঐকমত্য ও নাগরিক ভাবনা' শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. আলী রীয়াজ জানান, জনগণের মতামতের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সংবিধান চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশে রাষ্ট্র ধর্মের বিষয়ে কিছু দ্বিমত থাকলেও অন্যান্য বিষয়ে সবাই একমত। তিনি আরও যোগ করেন, ‘এই সংবিধান একটি রাজনৈতিক দলের আদর্শের প্রতিফলন, যা জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই এটি এখন রাষ্ট্রের আদর্শ হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়।’

সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতীয় সংসদকে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট করা, সংসদীয় আসন সংখ্যা ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৪০০ করা এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের বয়স ২১ বছর করা। এছাড়া রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও ক্ষমতা কমানোর প্রস্তাবও রাখা হয়েছে।

গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা সংবিধান থেকে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ শব্দটি বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করেন। তারা বলেন, সংবিধানে সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হলে এই শব্দটি অপসারণ জরুরি।

নির্বাচন প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়। বক্তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়া দীর্ঘ সময় ধরে চললে তা জনগণের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করতে পারে। তাই জরুরি সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিত। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘যৌক্তিক সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে নির্বাচনের দিকে এগোতে হবে। রাজনৈতিক দল ছাড়া দেশ চালানো সম্ভব নয়। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকেই সংস্কার করতে হবে।’

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই সংস্কার প্রক্রিয়া কতটা অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হবে, তা নিয়ে নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে।