অন্যান্য খবর রাজনীতি

সংক্ষিপ্ত ও বৃহৎ সংস্কারে নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা !

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ১৭-৩-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৬৫

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সর্বশেষ বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত করেছে। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো মনে করছে, নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার পূর্বের অবস্থানের তুলনায় এবার তার বক্তব্যে কিছুটা পরিবর্তন দেখা গেছে। এতে নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক নেতারা।

গত শুক্রবার ঢাকায় জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি ‘সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ’ নিয়ে একমত হয়, তবে নির্বাচন ডিসেম্বরেই হতে পারে। তবে তারা যদি ‘বৃহৎ সংস্কার প্যাকেজ’ গ্রহণ করে, তাহলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে। তার এই বক্তব্যে রাজনৈতিক দলগুলো নতুন করে ভাবনায় পড়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে তার আগের অবস্থানের পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। সংক্ষিপ্ত ও বৃহৎ সংস্কার বলতে তিনি কী বোঝাতে চাইছেন, তা পরিষ্কার নয়। বৃহৎ সংস্কার বলতে যদি সাংবিধানিক সংস্কার বোঝানো হয়, তাহলে সেটা পরবর্তী সংসদের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।’

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘সংস্কার কোনটা সংক্ষিপ্ত, কোনটা বিস্তৃত—সেটা ঠিক করবে কে? আমরা মনে করি, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো হওয়া দরকার। তারপর নির্বাচনের প্রক্রিয়া ঠিক করে প্রস্তুতির দিকে এগোতে হবে। কিন্তু এর গতি এখনও ধীর।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘সংস্কার তো এখনো শুরু হয়নি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ১৬৬টি প্রস্তাব পেশ করেছে। যেগুলোতে ঐকমত্য হবে, সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। এখানে ছোট বা বড় সংস্কারের প্রশ্ন ওঠে না। আমরা চাই, প্রয়োজনীয় সংস্কার করে একটি মানসম্মত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।’

অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য দেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কার আনা। এ লক্ষ্যে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাব জমা দিয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে এসব প্রস্তাব বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপি বড় সংস্কারে যাচ্ছে না। বড় সংস্কার হবে সংসদে। ছোটখাটো নির্বাচনী সংস্কার হতে পারে। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়, সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। আমরা মনে করি, নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট সংস্কারে এক-দেড় মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়। সে হিসেবে আগামী জুন-জুলাইতে নির্বাচন হতে পারে।’

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে। তারা মনে করছেন, সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কার বক্তব্য দেওয়া প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন রাজনৈতিক নেতারা।