সুন্দরবনের শাপলার বিল এলাকায় অন্তত আধা কিলোমিটারজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট। খুলনা ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, "কলমতেজী এলাকার আগুনের তুলনায় এটি আরও তীব্র। আগুন বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। বাগেরহাট ও খুলনা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট রোববার থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে এবং বর্তমানে পানি ছিটানোর কাজ শুরু হয়েছে।"
আগুনের সূত্রপাত
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, "কলমতেজী টহল ফাঁড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ চলাকালীন নতুন করে শাপলার বিল এলাকায় আগুনের সূত্রপাত ঘটে।" তিনি জানান, ড্রোন ও জিপিএস ট্র্যাকিং ব্যবহার করে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আগুনের উৎস শনাক্ত করেন এবং দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
আগুনের ভয়াবহতা
বন কর্মকর্তা আরো জানান, শাপলার বিল এলাকায় পৌঁছানোর পর তারা কিছু স্থান তীব্র আগুনে পুড়তে দেখেন, অন্যদিকে কিছু জায়গা থেকে ঘন ধোঁয়া উঠছিল। বনের ভেতরে হালকা বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তবে স্থানীয় গ্রামবাসী ও বন কর্মকর্তাদের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। পাইপের সাহায্যে পানি ছিটানোর কাজ শুরু করা হয়েছে।
ক্ষতির পরিমাণ ও তদন্ত
যদিও এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি কত একর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে কলমতেজী এলাকার মতো শাপলার বিলের আশপাশেও পানির উৎস তিন কিলোমিটার দূরে। কলমতেজীর আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তবে এলাকাটি এখনো নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
শনিবার, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের কলমতেজী টহল ফাঁড়ি এলাকায় আগুন লাগে। তবে ফায়ার সার্ভিস তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক দীপন চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যত পদক্ষেপ
এলাকা পর্যবেক্ষণে রাখা হলেও, বন বিভাগের পক্ষ থেকে ভবিষ্যতে এমন আগুনের ঘটনা প্রতিরোধে আরও সতর্কতা অবলম্বনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বনভূমি রক্ষায় স্থানীয় জনগণের সহায়তা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।