অন্যান্য খবর ব্যবসা ও বাণিজ্য

সয়াবিন তেলের আমদানি বাড়লেও বাজারে সংকট !

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ১৭-৩-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৫৮

ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে প্রতিদিন চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে খালাস হচ্ছে সয়াবিন তেলের কাঁচামাল। গত ১৭ দিনে এক লাখ ৩৬ হাজার টন সয়াবিন তেল ও বীজ আমদানি করা হয়েছে, যা অতীতের যেকোনো রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। তবে আমদানি বৃদ্ধি সত্ত্বেও বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট কাটছে না। সংকটের সুযোগ নিয়ে খুচরা বিক্রেতারা নির্ধারিত দামের চেয়ে লিটারপ্রতি পাঁচ থেকে দশ টাকা বেশি নিচ্ছেন।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ মার্চ পর্যন্ত ১৭ দিনে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এক লাখ টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল এবং দুই লাখ টন সয়াবিনবীজ খালাস করা হয়েছে। সয়াবিনবীজ মাড়াই করে আরও ৩৬ হাজার টন তেল উৎপাদন করা সম্ভব। তবে আমদানি বাড়লেও বাজারে সরবরাহ বাড়েনি বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।

চট্টগ্রামের খুচরা বাজার চকবাজার ও বহদ্দারহাটে সরবরাহ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা গেছে। সেখানে এক বা দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের মজুত কম পাওয়া গেছে। পাঁচ লিটারের বোতলের গায়ে ৮৫০ টাকা দাম লেখা থাকলেও বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকার বেশি দামে। এক লিটারের বোতলের দাম চাওয়া হচ্ছে ১৮৫ টাকা, যা নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পরিবেশকরা পর্যাপ্ত তেল বাজারে ছাড়ছেন না। চকবাজারের এক বিক্রেতা মাসুম বলেন, প্রতি লিটার সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে ১৭৫ টাকার বেশি দামে। তাই ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। ক্রেতারা যাতে ঝামেলা না করে, তাই দাম মুছে দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, পরিবেশকরা বলছেন, তারা আগের তুলনায় বেশি তেল সরবরাহ করছেন। টি কে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আতহার বলেন, ‘আমদানি বাড়ছে এবং আমরা প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ তেল বাজারে দিচ্ছি। এখন সংকট হওয়ার কথা নয়।’

এদিকে, সরকারের দেওয়া শুল্কছাড়ের সুবিধা ৩১ মার্চ শেষ হচ্ছে। শুল্কছাড় উঠে গেলে লিটারপ্রতি সয়াবিন আমদানি ও বাজারজাতে ১৪ থেকে ১৫ টাকা বাড়তি শুল্ক–কর দিতে হবে। এতে সয়াবিন তেলের দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই আশঙ্কায় সয়াবিন মজুতের প্রবণতাও বাড়ছে। গত সপ্তাহে চট্টগ্রামের খতিবের হাট এলাকায় এক দোকান থেকে ৬ হাজার ৭০০ লিটার বোতলজাত সয়াবিন উদ্ধার করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (চট্টগ্রাম) মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ‘বাজারে সয়াবিনের মজুত পাওয়া গেছে। বিশেষ করে ডিলারদের কাছে মজুত রয়েছে। বোতলের গায়ে লেখা দামের চেয়ে বেশি বিক্রি হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ ও দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন ভোক্তারা। এ অবস্থায় শুল্কছাড়ের মেয়াদ বাড়ানো এবং বাজার মনিটরিং জোরদার করার দাবি উঠেছে।