সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে মাছের নিরাপদ অভয়াশ্রম ও জলাভূমি সংরক্ষণে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে যত্রতত্র গড়ে ওঠা হাঁসের খামার দ্রুত তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। গত শনিবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেজে গণবিজ্ঞপ্তি প্রচার করে এ নির্দেশনা জানানো হয়।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “টাঙ্গুয়ার হাওরে বিভিন্ন স্থানেই হাঁসের খামার গড়ে উঠেছে, যা মৎস্য অভয়াশ্রমের রেণু পোনার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এসব হাঁস নির্বিচারে রেণু পোনা খেয়ে মাছের মজুদ ধ্বংস করছে।”

এমতাবস্থায়, জেলা প্রশাসক খামারিদের দ্রুত খামার সরিয়ে নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে জানিয়েছেন যে, আগামী ২৩ মার্চ থেকে খামার উচ্ছেদসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হাশেম বলেন, “টাঙ্গুয়ার হাওরে অনেক হাঁসের খামার গড়ে উঠেছে। খামারিরা সংরক্ষিত জলাশয়ে হাঁস ছেড়ে দেওয়ায় রেণু পোনা খাচ্ছে হাঁস, যার ফলে হাওরে মাছের সংকট দেখা দিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা বারবার খামারিদের সতর্ক করলেও তারা খামার তুলে নিচ্ছেন না। তাই আগামীকাল থেকে খামার উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে, সুনামগঞ্জ হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সহসভাপতি অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, “হাঁস পালন ও মাছ ধরা হাওরের কৃষকদের ঐতিহ্যগত পেশা। হঠাৎ করে মাছ রক্ষার নাম দিয়ে হাঁসের খামার উচ্ছেদ করা ঠিক হবে না। বরং হাওরে প্রকাশ্যে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।” তিনি আরও বলেন, “কৃষকদের স্বার্থের কথা ভেবে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা উচিত।”

এখন দেখা যাচ্ছে, জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় সংগঠনগুলোর মধ্যে এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়েছে, তবে খামার উচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু হবে আগামী দিনগুলোতে।