সকল খবর দেশের খবর

তিস্তা সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজের গতি ধীর

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ১-২-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৪৯

প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০২২ সালের জানুয়ারিতে, তবে তিন বছর পরও প্রকল্পের কাজের মাত্র ৪২ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। ২০২৪ সালের জুনে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও প্রকল্পের বাস্তবায়ন তীব্র গতির অভাবে থেমে আছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মাহবুব রহমান জানিয়েছেন, প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের অভাব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই, প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় প্রকল্পের গতি শ্লথ হয়ে পড়েছে, তবে কাজ চলমান রয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় ২০২১ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) 'তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ' প্রকল্পটি পাস হয় এবং ২০২২ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল তিস্তা সেচের আওতাধীন ১ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে সেচের পানি সরবরাহের জন্য ৭৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি সেচ ক্যানেল নির্মাণ। কিন্তু প্রকল্পটির বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় কাজের গতি কমেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা আশাবাদী, প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে দেশের কৃষি উৎপাদনে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে এবং প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদিত হবে। তবে প্রকল্পটির কাজ ধীরগতিতে চলায় এই লক্ষ্য অর্জন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

শুষ্ক মৌসুমে পানি সংকটের সমস্যা

এদিকে, তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প এলাকায় সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহের জন্য তিস্তা নদীতে স্বাভাবিক প্রবাহ থাকতে হয় প্রায় ২০ হাজার কিউসেক পানি। এর মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার কিউসেক পানি সেচের জন্য এবং ৬ হাজার কিউসেক পানি নদীর অস্তিত্ব রক্ষার জন্য প্রয়োজন। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে তিস্তায় প্রয়োজনীয় পানি পাওয়া যায় না। বিশেষ করে বোরো আবাদের সময়, কয়েক বছর ধরে শুধুমাত্র ৩-৪ হাজার কিউসেক পানি পাওয়া যাচ্ছে, যা পুরো সেচ চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট নয়।

যতটুকু পানি তিস্তায় পাওয়া যাচ্ছে, তার সবটুকুই সেচ চাহিদা পূরণ করতে তিস্তা ব্যারাজ সেচ খালের মাধ্যমে কৃষিজমিতে সরবরাহ করা হচ্ছে, যার ফলে প্রকল্পের কার্যক্রমে কিছুটা বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।

এখনও পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ ধীরগতিতেই চলমান থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড আশা করছে, প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ মেলার পর প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাবে এবং তিস্তা সেচ ব্যবস্থার উন্নতি হবে।