অন্যান্য খবর ব্যবসা ও বাণিজ্য

ভারত বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে!

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ৯-৪-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৫১

ভারত বাংলাদেশকে দেওয়া দীর্ঘদিনের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে, যা দিয়ে বাংলাদেশ ভারতীয় স্থল শুল্ক স্টেশন (LCS) ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানি করতো। মঙ্গলবার ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকারের এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়, যার ফলে বাংলাদেশে রপ্তানি ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। খবর প্রকাশ করেছে দ্য হিন্দু।

২০১৯ সালের জুনে বাংলাদেশকে ভারতে পণ্য রপ্তানির এই সুবিধা দেওয়া হয়েছিল, যার মাধ্যমে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারের মতো দেশে বাংলাদেশের রপ্তানির জন্য বাণিজ্য প্রবাহ বাধাহীন ছিল। তবে, ৮ এপ্রিল ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বিভাগের জারি করা এক নতুন বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই সুবিধাটি বাতিল করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ২০২০ সালের ২৯ জুনের পূর্ববর্তী সার্কুলারটি বাতিল করা হয়েছে এবং এটি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।

ভারতীয় সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে রপ্তানিকারকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ভারতের পোশাক খাতের রপ্তানিকারকরা এই সুবিধার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশকে সমালোচনা করেছিলেন। এফআইইও (ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনস)-এর মহাপরিচালক অজয় সাহাই বলেছেন, ভারতীয় রপ্তানি খাতের জন্য এটি একটি সহায়ক সিদ্ধান্ত, কারণ এর ফলে ভারতে রপ্তানি পণ্য পরিবহনে অতিরিক্ত সক্ষমতা তৈরি হবে এবং বন্দর ও বিমানবন্দরে জায়গা বাড়বে।

তবে, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধাক্কা হতে পারে, বিশেষ করে বাংলাদেশের পোশাক, পাদুকা, রত্ন ও গহনা শিল্পের জন্য। গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই)-এর প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানি এবং আমদানি কার্যক্রমে এখন উল্লেখযোগ্যভাবে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। এই পদক্ষেপে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা লজিস্টিক বিলম্ব, উচ্চ ব্যয় এবং অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হতে পারেন।

উল্লেখযোগ্য যে, ভারতে এই সুবিধা বাতিলের ফলে নেপাল ও ভুটান, দুইটি স্থলবেষ্টিত দেশও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের সুবিধা বাতিল হওয়ায় এই দেশগুলোর সঙ্গে তাদের বাণিজ্যেও বাধা আসতে পারে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিধি অনুযায়ী, স্থলবেষ্টিত দেশগুলোর জন্য বাধাহীন ট্রানজিট প্রদান বাধ্যতামূলক, যা এই পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।

এই নতুন সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে, এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতায় এর প্রভাব পড়তে পারে বলে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।